অবশেষে অপসারণ করা হচ্ছে সৈকতে ভেসে আসা বর্জ্য
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা বর্জ্য অবশেষে চার দিন পর অপসারণের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।
তবে এ সব বর্জ্যের উৎস সম্পর্কে এখনো প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করতে না পারলেও এ ব্যাপারে গঠিত কমিটির কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (১৫ জুলাই) সকাল ১০টায় কক্সবাজার সৈকতের দরিয়ানগর পয়েন্ট থেকে বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রম শুরুর সময় জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সৈকতের নাজিরারটেক পয়েন্ট থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার জুড়ে প্লাস্টিক, পলিথিন, মদের বোতল, রশি ও ছেঁড়া জালসহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নানা ধরনের বর্জ্যগুলো অপসারণের কর্মসূচিতে পরিবেশাবাদী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী এবং স্থানীয়রা অংশ নেন।
গত শনিবার (১১ জুলাই) রাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রায় ৫০ টন বর্জ্য ভেসে আসে। এর প্রেক্ষিতে গত রোববার (১২ জূলাই) রাতে বর্জ্যগুলোর উৎসের অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) প্রধান এবং বনবিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্যসম্পদ কর্মকর্তাকে সদস্য করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিবেশ অধিদপ্তর ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো মিলে সৈকতের বিশাল অংশজুড়ে জমে থাকা বর্জ্যগুলো অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে ১০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ছাড়াও স্থানীয় ২ শতাধিক লোক অংশ নিচ্ছেন। সংগৃহীত এসব বর্জ্য নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে মজুদ করে পুড়িয়ে ফেলা হবে।
জেলা প্রশাসক জানান, ইতিপূর্বে মৃত ৪০টি সামুদ্রিক কাছিম ও সাপসহ জলজ প্রাণিগুলো কয়েকটি স্থানে মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে। আহত অবস্থায় সৈকতের বালিয়াড়িতে পড়ে থাকা শতাধিক কাছিমকে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, ‘‘বর্জ্যগুলো থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এসব নমুনার অধিকাংশই যেমন বোতল ও অন্যান্য সামগ্রী আমাদের দেশে ব্যবহৃত হয় না। এসব নমুনা তদন্ত কমিটির কাছে জমা দেওয়া হবে। তারা পর্যবেক্ষণ করে এগুলোর উৎস সম্পর্কে একটা ধারণা প্রশাসনের কাছে দিতে পারবেন।’’
কী কারণে মৃত্যু হয়েছে- তা জানতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মৃত সামুদ্রিক কাছিমসহ অন্যান্য জলজ প্রাণিগুলোর নমুনা ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে বলে জানান কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, প্রতিবেদন হাতে আসার পর জলজ প্রাণিগুলো কেন মারা যাচ্ছে বা আহত হচ্ছে- তা জানা সম্ভব হবে। এছাড়া আহত অবস্থায় কোনো প্রাণি পেলে সেটির প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সাগরে অবমুক্ত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
* সৈকতে ভেসে আসছে টন টন প্লাস্টিক বর্জ্য, মরছে কচ্ছপ
* সৈকতে বর্জ্য: চল্লিশের বেশি কচ্ছপের মৃত্যু
* সৈকতে প্লাস্টিক বর্জ্য আসার কারণ অজানা
ঢাকা/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন