ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আশা জাগাচ্ছে আনারসের চিপস

বিজয় ধর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০০:৫১, ১৮ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
আশা জাগাচ্ছে আনারসের চিপস

রাঙামাটিতে নানিয়ারচরে এবার আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। দ্রুত পচনশীল এ ফল পাহাড় থেকে বাজারজাত করা সবচেয়ে বড় সমস‌্যা। তবে পাহাড়ের এ আনারস দিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো বানানো হচ্ছে আনারসের চিপস।

নানিয়ারচরের হর্টিকালচার সেন্টারের ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে পরীক্ষমূলকভাবে শুরু হয়েছে আনারসের চিপস উৎপাদন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এ চিপস তৈরি করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে সফলতা আসলে পরবর্তীতে বাজারজাত করা হবে।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার রাঙামাটিতে ২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৫৫ হাজার আনারস উৎপাদনের লক্ষ‌্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। নানিয়ারচরে সবেচেয়ে বেশি আনারস উৎপাদন হয়েছে।

নানিয়ারচরে কৃষক রিপন চাকমা বলেন, ‘আনারসের প্রচুর উৎপাদন হয় রাঙামাটিতে। এখানকার আনারস দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায় পাইকারী ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এরপরেও বেশিরভাগ সময় আমরা আনারসের ন‌্যায‌্য মূল্য পাই না। আশা করছি, এ চিপস কারখানার ফলে আমরা নানিয়ারচরের কৃষকরা বেশি দামে আনারস বিক্রয় করতে পারবো।’

রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে এটাই প্রথম আনারসের চিপস উৎপাদন কেন্দ্র। পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন চলছে। হানিকুইন জাতের আনারসের দিয়ে কোনো কেমিক্যাল ছাড়া এ চিপস উৎপাদন করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে প্রচুর আনারস উৎপাদন হয় কিন্তু কৃষকরা সবসময় ন‌্যায‌্য দাম পাই না। তাই সারা বছর আনারসকে প্রক্রিয়াজাত করে যাতে চিপস তৈরি করা যায় এবং কৃষকরা লাভবান হয় সে লক্ষ্যে পরীক্ষামূলক এ কাজ শুরু করা।’

নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, ‘আনারসের জন্য বিখ্যাত নানিয়ারচর উপজেলা। আশা করি, আনারসের চিপস সঠিকভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করতে পারলে কৃষকরা তাদের প্রত‌্যাশীত দাম পাবে।’

এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন’ প্রকল্পের পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘নানিয়ারচর কৃষকরা এক সময় জমি থেকে আনারস তুলতে চাইতেন না বাজারে দাম কম বলে। আমরা চিন্তা করলাম আনারসটাকে প্রক্রিয়া করে যদি চিপস আকারে নেওয়া হয় তাহলে সবাই খেতে পারবে। কৃষকও লাভোবান হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত জানুয়ারি থেকে এ চিপস উৎপাদনের কাজ শুরু করেছি। ২০২৩ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। এই চিপস তৈরিতে কোনো ধরনের মসলা ব্যবহার করা হয়নি। শুধু আনারসকে শুকিয়ে চিপস তৈরি করা হয়ছে। পরবর্তীতে আম, কাঠাঁলেরও আচার ও চিপস তৈরি করতে পারবো।’

মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘এ প্রকল্পের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তরুণ উদ্যেক্তা সৃষ্টি করার জন্য এ প্রকল্প হাতে নেওয়া। কেউ ব্যক্তিগত পর্যায়ে শুরু করে লাভবান হলে বিদেশে রপ্তানিও করতে পারবে।’

 

রাঙামাটি/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়