ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

মানিকগঞ্জে বন্যা: কৃষিতে ক্ষতি ১৭১ কোটি টাকা

মানিকগঞ্জ সংবাদাদাতা   || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৮, ১২ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
মানিকগঞ্জে বন্যা: কৃষিতে ক্ষতি ১৭১ কোটি টাকা

মানিকগঞ্জে দুদফা বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলার দুটি পৌরসভা এবং ৬৫টি ইউনিয়নে ৩১ হাজার ৫৭৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে ১৭১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এমন তথ‌্য জানিয়েছে, আর সরেজমিনে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত দেখে এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে বাস্তব পরিস্থিতি দেখা গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাজাহান বিশ্বাস বলেন, মানিকগঞ্জে পানি কমতে শুরু করেছে। সম্পূর্ণ কমে গেলে এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, মানিকগঞ্জে ৭টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বোনা আমন, আউশ, বেগুন, পটল, জিংগা, কুমড়া, মরিচসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেত বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড গ্রামের আওলাদ হোসেন বলেন, ‘এ বছর মোট ৫০ শতাংশ জমিতে বিভিন্ন সবজি ও আখ চাষ করেছিলাম। প্রথমে সবজি চারা ডুবে যায়। তারপর আশায় ছিলাম আখ বিক্রি করে সংসার চালাব। কিন্তু আখ খেতে বন্যার পানি জমে তাও নষ্ট হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটী ইউনিয়নের জামাল বলেন, ‘১২ টি গবাদি পশু পালন করি। ক্ষেতে পানি থাকায় গরুকে কাঁচা ঘাস খাওয়াতে পারি না। শুধু খর ও ভুসি ও কুড়া খাওয়াচ্ছি। যেখানে একটি গরু দুধ হতো ৬ লিটার, সেখানে হচ্ছে ৩ লিটার।’

দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা ইউনিয়নের সবুরদি পাচুরিয়া গ্রামের জুয়েল বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নের শতভাগ পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। আমি ৪০ শতাংশ জমিতে করলা চাষ করেছিলাম, আমার সব নষ্ট হয়ে গেছে।’
হরিরামপুর উপজেলার বয়রা ইউনিয়নের আন্দারমানিক গ্রামের মিশন চৌধুরী বলেন, ‘করোনার জন্য আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা ছিল। এরপর মাছ বানের পানিতে ভেসে গেছে। আমার একটি পুকুরে ৩ লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 
সাটুরিয়া উপজেলার কুষ্টিয়া গ্রামের মান্নান বলেন, ‘পানি সেচ দিয়ে পাট চাষ করলাম। আমার বন্যার পাট না কাটতে পাড়ায় সব পাট খেতেই নষ্ট হয়ে গেল।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মো. শাজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, ‘মানিকগঞ্জে দুদফায় বন্যা হয়েছে। ১১ আগস্ট পর্যন্ত জেলায় সম্ভাব্য ১৭১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মানিকগঞ্জ সম্পূর্ণ বন্যামুক্ত হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। আমাদের কৃষি বিভাগে সচিবসহ ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ মানিকগঞ্জের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আমরা উপজেলাভিত্তিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করছি। পর্যায়ক্রমে সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হবে।

হাসান ফয়জী/সাজেদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়