ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

চাকের জালে সচল সংসারের চাকা 

জাহিদুল হক চন্দন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৩, ১৫ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
চাকের জালে সচল সংসারের চাকা 

বন‌্যায় তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত। অসহায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের লোকজন। এখন এই এলাকার অনেকের সংসার চলে চাকের জালে মাছ ধরে।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুতালড়ী, লেছড়াগঞ্জ ও আজিমনগর ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকাই চরাঞ্চল। এসব অঞ্চলে ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চাষিরাও ঝুঁকেছেন মাছ শিকারে।

জালে ধরা পড়ে ইলিশ, পাঙ্গাশ, রুই, কাতলাসহ হরেক রকম মাছ। প্রতিদিন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ট্রলার দিয়ে নদীর পাড়ে জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনে নিয়ে যায়। 

হরিনা ঘাট এলাকায় রনি নামের এক জেলে বলেন, ‘প্রায় ৭ বছর ধরে পদ্মা নদীতে চাক জাল দিয়ে মাছ শিকার করি। ২-৩ বছর আগেও বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকার মাছ বিক্রি করতে পারতাম। তবে এবার বন্যার কারণে নদীতে স্রোত বেশি থাকায় আগের মতো মাছ শিকার করা যাচ্ছে না।’

পদ্মা নদীর পাড়ে আতিকুর রহমান এক নামের চাষি বলেন, ‘বন্যায় আমার ১৭ শতাংশ জমির ভুট্টা তলিয়ে গেছে। হাতে কোনো কাজ না থাকায়  চাক জাল দিয়ে মাছ শিকার করি। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে কিছু মাছ ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করে কোনো রকম সংসারটা চালাচ্ছি। যেদিন জালে কম মাছ ওঠে সেদিন সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যায়।’

সুকুমার হাওলাদার নামে এক জেলে জানান, প্রতিটি চাক জাল তৈরিতে খরচ হয় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। এসব চাক জাল দিয়ে মাছ ধরতে বেশ শক্তির প্রয়োজন। সারা দিন নদীর স্রোতের সঙ্গে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে জাল ওঠা নামা করতে হয়। ফলে রাত হলেই শরীরে ব্যথা শুরু করে।

তৌহিদুর নামে এক মাছ ব্যাপারী বলেন, ‘প্রতিদিন পদ্মা নদীর পাড়ে জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনে তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করি। নদীর মাছ হওয়ায় প্রায় সব বাজারেই এর চাহিদা রয়েছে।’

আজিমনগর ইউনয়িন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন জানান, বর্ষা মৌসুমে এ ইউনিয়নের মানুষের তেমন কোনো কাজ না থাকায় একমাত্র ভরসা মাছ শিকার করা। এবার বন্যায় চাষিদের ফসলের ক্ষতি হওয়ায় তারাও মাছ শিকার করে দিন পার করছেন। 

মানিকগঞ্জ/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়