ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নওগাঁ-৬ আসনে উপ-নির্বাচন: কে হচ্ছেন নৌকার প্রার্থী

এ কে সাজু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ১৮ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১২:৩৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০
নওগাঁ-৬ আসনে উপ-নির্বাচন: কে হচ্ছেন নৌকার প্রার্থী

উপ-নির্বাচন হতে যাচ্ছে নওগাঁ-৬ আসনে।  প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলমের আসনে কে হচ্ছেন নৌকার প্রার্থী।  এই করোনা পরিস্থিতিতেও এলাকার সর্বত্র এটাই এখন আলোচনার বিষয়।

রাণীনগর ও আত্রাই এই দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ ও সংসদীয় আসন-৫১।  প্রায় এক যুগ শাসন করার পর গত ২৭ জুলাই সাংসদ ইসরাফিল আলম মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য হয়।  ইতোমধ্যে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের কয়েক জনের নাম শোনা যাচ্ছে।  অনেকেই শুরু করেছেন আগাম নির্বাচনী গণসংযোগ, পথসভা, মিটিং ও সিটিং।  তবে কে পাচ্ছেন নৌকা টিকিট তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

নওগাঁ-৬, সিরাজগঞ্জ-১, পাবনা-৪, ঢাকা-৫ ও ঢাকা-১৮ আসনে উপ-নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের আহ্বান জানানো হয়েছে।  আগ্রহী মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে ১৭ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়নের আবেদনপত্র সংগ্রহ এবং জমা দিতে পারবেন। 

এই আসন থেকে ১৯৯১ ও ৯৬ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর।  তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান।  ২০০১ সালে ইসরাফিল আলমকে পরাজিত করে আলমগীর কবীর বিজয়ী হন।  ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবির এলডিপিতে যোগ দেন।  একই বছরে এলডিপি থেকে পদত্যাগ করেন।  ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম।  তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু।  এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরকে পরাজিত করে আবারো বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম।  মূলত এ আসনটি চারবার বিএনপির অধীনে থাকলেও ২০০৮ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে।

মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা:

উপ-নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যতম একজন প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলমের স্ত্রী পারভীন সুলতানা বিউটি।  তিনি বলেন, এই আসনে আমি মানুষের কাছে একটি পরিচিত মুখ।  স্বামীর পাশাপাশি আমিও বিভিন্ন সময় এই দুই উপজেলার মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি।  যদি প্রধানমন্ত্রী আমাকে সুযোগ দেন তাহলে আমি ইসরাফিলের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করবো ইনশাল্লাহ।

অন্যতম অলোচিত হচ্ছেন সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন মনোয়ারা হক।  তিনি বলেন, আমি ১৯৯৬ সালে সংরক্ষিত আসনে প্রথম এমপি হওয়ার পর থেকে রাণীনগর ও আত্রাইবাসীর জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি।  তাই প্রধানমন্ত্রী আমার সবকিছু বিবেচনা করে যদি আমার এলাকার মানুষদের সেবা করার সুযোগ দেন তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ্রগ্রহণ করবো।

আরেকজন সম্ভাব্য প্রার্থী হচ্ছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী।  তিনি বলেন, আমি রাণীনগরের সন্তান।  কর্ম আর রাজনৈতিক কারণে আমাকে রাজশাহীতে বসবাস করতে হলেও আমার সব কিছুই এলাকার মানুষের জন্য।  গত সংসদ নির্বাচনেও আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম।  তাই দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করবো এবং শতভাগ বিজয়ী হবো বলে আশাবাদি।

জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সুমনও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী।  তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত এই আসনের মানুষের সুখ দুঃখের সাথে জড়িয়ে আছি।  আমাকে সকল স্তরের মানুষ ভালো বাসেন।  তাদের ভালোবাসা নিয়ে চলতে চাই।  আশা করি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।  আর মনোনয়ন পেলে আমি বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হবো।  বিগত দিনগুলোর মত আমি সারাজীবন মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবো ইনশাল্লাহ।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আরেকজন হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মো. আব্দুর রহমান।  তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে শত ভাগ জয়যুক্ত হবো ইনশাল্লাহ।  আর এমপি হতে পারলে আত্রাই রাণীনগরকে সন্ত্রাস, জঙ্গি ও মাদক মুক্ত করবো।  আমি নির্বাচিত হলে এই আসনের মানুষ স্বাধীন ভাবে চলা ফেরা ও  কথা বলতে পারবে।

রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আসাদুজ্জামান নূরুলও প্রার্থী হতে চান।  তিনি বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আওয়ামী লীগ করে আসছি।  রাণীনগরের সন্তান বলে সবসময় এই অঞ্চলের মানুষের সুখে-দুঃখে থাকার চেষ্টা করেছি।  তাই আমার সবকিছু বিচার-বিবেচনা করে যদি দল আমাকে মনোনীত করে তাহলে নির্বাচন করবো।  তা না হলে নৌকা যে পাবে তার হয়ে কাজ করবো।

এছাড়া নওগাঁ জেলা যুবলীগের সভাপতি খোদাদাদ খাঁন পিটু, সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায়সহ সব মিলিয়ে ডজনখানেক মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে।

রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন বলেন, যদি প্রধানমন্ত্রী চান তাহলে আমরা আমাদের পছন্দের ব্যক্তিদের তালিকা পাঠাবো।  আমি আশাবাদি প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলের জন্য স্বাধীনতার পক্ষের একজন সৎ, শিক্ষিত ও নির্ভিক মানুষকেই নৌকা প্রতীক দিবেন।  প্রধানমন্ত্রী যাকে মনোনয়ন দিবেন আমরা তার হয়েই কাজ করবো।

নওগাঁ/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়