সুনামগঞ্জের হাওরে হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। ‘হাওর এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

এলজিইডি সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ছাড়াও প্রকল্পের মাধ্যমে ১০৭ কিলোমিটার নান্দনিক সড়ক নির্মাণ করা হবে। ২৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। বর্ষা মৌসুমে এসব সড়ক ডুবে গেলেও কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া উপজেলা সাবমারজিবল সড়ক হবে ১৩ কিলোমিটার। অল সিজন ইউনিয়ন সড়ক হবে ১৫ কিলোমিটার। উপজেলা সড়কে ২ হাজার ৯৮৭ মিটার ও ইউনিয়ন সড়কে ৬৮৫ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

বিভিন্ন সড়কে থাকবে ৭৭৫ মিটার কালভার্ট। হাওরে উড়াল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) বৈঠকও হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, এই প্রকল্পটিতে পরিকল্পনা কমিশন কিছু নতুন নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পটি পাঠালে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে।

প্রকল্প প্রসঙ্গে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ খান বলেন, সুনামগঞ্জে হাওরের কারণে অধিকাংশ উপজেলায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এসব উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি একেবারেই প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। প্রকল্প নিয়ে পিইসি সভাও হয়েছে। আরও কিছু যাচাই-বাছাই করে প্রকল্পটি একনেক সভায় উঠবে।

হাওরে উড়াল সড়ক প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান রাইজিংবিডিকে বলেন, বছরে ছয় মাস হাওর অঞ্চলে পানি থাকে। ধান ও মাছ ছাড়া অন্য কোনো আয়ের সংস্থান নেই সেখানে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে হাওরের জন্য অনেক উন্নয়ন প্রকল্প দিয়েছেন। এজন্য আমরা হাওরবাসী প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। নতুন করে হাওরে উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে। এর ফলে হাওরে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

জানা গেছে, উড়াল সড়ক নির্মাণ পরবর্তী পর্যায়ে পরিবেশ ও সামাজিক ভারসাম‌্য রক্ষার ব‌্যবস্থা করা হবে। বছরব্যাপী এবং উড়াল সড়কের জন্য ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা নেওয়া হবে। উড়াল সড়কের শব্দ থেকে হাওরের উদ্ভিদ ও প্রাণির বিঘ্ন যাতে না ঘটে, এজন্য শব্দ প্রতিরোধক ব্যবহার করা হবে। ইতোমধ‌্যে  রাস্তার ধরণ ও অ্যালাইনমেন্ট, প্রস্থ, উচ্চতা, চাপ, অবস্থান নির্ণয় করা হয়েছে। সার্ভে করা হয়েছে।