ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ধামইরহাটে ডিএপি সারের কৃত্তিম সংকট, দিশেহারা কৃষক

ধামইরহাট (নওগাঁ) সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ১৮ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ধামইরহাটে ডিএপি সারের কৃত্তিম সংকট, দিশেহারা কৃষক

নওগাঁর ধামইরহাটে আমনের ভরা মৌসুমে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে।

প্রায় একমাস ধরে ডিএপি সারের কৃত্রিম সংকটের কারণে মাঠ পর্যায়ের সাধারণ কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

কৃষকদের অভিযোগ, আমদানিকারকদের কারসাজিতে চীন থেকে আমদানি করা এই সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় এই সার মজুদ করে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। এই সুযোগে তারা নয়শ’ থেকে হাজার টাকায় ডিএপি সারের বস্তা বিক্রি করছেন। শুধু তাই নয়, স্থানীয় কোনো কোনো ডিলারের কাছে ডিএপি সার কিনতে গেলে তারা কৃষকদের ইউরিয়া সারও কিনতে বাধ‌্য করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে পরিদর্শন করে জানা গেছে, নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় তালিকাভুক্ত ১২ জন সারের ডিলার রয়েছেন। আমন ধান চাষের ভরা মৌসুমে সরকারের বেধে দেওয়া প্রতি বস্তা ডিএপি সার আটশ টাকা দরে বিক্রয় করার কথা থাকলেও সার সংকটের কারণ দেখিয়ে চড়া দামে ডিএপি সার বিক্রি করছেন তারা। এমন অবস্থা চলমান থাকলে এবার আমন ধান উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এখানকার কৃষকরা।

এ ব্যাপারে চকযদু গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন, রেজোয়ান হোসেন ও সাংবাদিক মোতাররফ হোসেন মুকুল জানান, সরকারের বেধে দেওয়া ডিএপি সারের মূল্য আটশ’ টাকা ঘোষণা করা হলেও তা আমাদের নয়শ থেকে হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। এসময় কৃষকের সুবিধার্থে সরকারের বেধে দেয়া মূল্যে সারের সরবরাহ করার জন‌্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।

মোবাইল ফোনে ধামইরহাট পূর্ব বাজারের সার ডিলার কামরুজ্জামানের কাছে ডিএপি এক বস্তা সার চাইলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘শুধু ডিএপি সার বিক্রি হবে না। এর সঙ্গে ইউরিয়া সারও নিতে হবে।’

টিএনটি মোড়ের সার ব্যবসায়ী আবুল ট্রেডার্সের আব্দুল্লাহ আল মামুন সার সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘যেখানে আমরা ৩০০-৪০০ বস্তা সার বরাদ্দ পেয়ে থাকি সেখানে এবার মাত্র ২৫০ বস্তা ডিএপি সার বরাদ্দ পেয়েছি যা এক সপ্তাহে শেষ হয়ে গেছে।’ এসময় তিনি সারের মূল‌্য বৃদ্ধির জন‌্য আমদানিকারকদের ও বিভিন্ন হাত বদলকে দায়ী করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা জানান, ধামইরহাটে ডিএপি সারের কোনো সংকট নেই। সরকারিভাবে ডিএপি সারের মূল‌্য কমার কারণে সাধারণ কৃষক ইউরিয়া সারের পরিবর্তে ডিএপি সার জমিতে বেশি করে দিচ্ছেন। সে কারণেই নির্দিষ্ট বরাদ্দের ওপরে একটু চাপ পড়লেও বাজারে সারের কোনো ঘাটতি নেই।

তিনি আরো বলেন, সরকারিভাবে প্রতিটি ডিএপি সার বস্তার বিক্রয়মূল্য আটশত টাকা। কোনো ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে এর বেশি মূল্যে সার বিক্রি করছেন— এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডিএপি সারের বস্তার বিক্রয়মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন‌্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

অরিন্দম/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়