ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে মনপুরা

আবদুল মালেক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৪, ২৪ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে মনপুরা

মেঘনার তীব্র স্রোতে চর্তুদিক থেকে ভেঙে কেবলই ছোট হয়ে আসছে দ্বীপজেলা ভোলার অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন জনপদ মনপুরা।

গত কয়েক বছরে মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার একর ফসলি জমি, ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব মনপুরা উপজেলার অনেক বাসিন্দা।  সহায় সম্বল ভিটেমাটি হারিয়ে মানুষ বেড়ি বাঁধের ঢালে জেগে উঠা কলাতলী চর, কাজীর চরে ঠাঁই নিয়েছে।  কয়েক বছরে মেঘনা নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পর্যটকদের আকর্ষনীয় স্থান, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, মসজিদ-মন্দিরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।

এই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বিবেচিত হাজির হাট ইউনিয়ন এখন তীব্র ভাঙনের কবলে।  এই ইউনিয়নের নাইবের হাট, সোনারচর গ্রামের অর্ধাংশ, চরঞ্জান, দাসের হাট প্রায় সম্পূর্ণই নদীর গর্ভে বিলীন।  ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে হাজীরহাটের লতিফ ভুইয়া বাড়ি সংলগ্ন পশ্চিম পাশের পাকা বেড়িবাঁধ, দাসের হাটের কালির টেক সংলগ্ন পাকা বেড়ি বাঁধ, চৌধুরী বাজারের পূর্বপাশ।  মেঘনার অব্যাহত ভাঙনের ফলে কেবলই জনপদের ভিতরে ঢুকছে।  মনপুরা ফিশারিজ লিঃ এর অর্ধাংশ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।  সোনারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙনের হুমকির মুখে।  যে কোন সময় স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

মনপুরা ইউনিয়নের উত্তর মাথা দিয়ে স্থায়ী ব্লক ফালানোর ফলে ভাঙন রোধ হয়েছে।  তবে একই ইউনিয়নের কাউয়ারটেক, সীতাকুন্ড, ঈশ্বরগঞ্জ মৌজার পুর্বাংশে অধিকাংশ গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।  মনপুরা ইউনিয়নের ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত স্থান নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।  এসব প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে।  প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে পথে বসতে শুরু করেছে।

একইভাবে উত্তর সাকুচিয়া ও দক্ষিণ সাকুচিয়া মেঘনার ভাঙনে কেবলই ছোট হয়ে যাচ্ছে।  দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের হেলাল তালুকদার বাড়ি সংলগ্ন পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে ভাঙছে।  পাকা বেড়িবাঁধটি অধিকাংশ ভেঙে গেছে।  যেকোন মুহূর্তে পাকা ভেঙে ভিতরে জোয়ারের পানি প্রবেশ করবে।  পানিবন্দি হয়ে পড়বে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন।  তালতলা সূর্যমুখী খাল সংলগ্ন বেড়িবাঁধও ভাঙনের হুমকির মুখে।  উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাষ্টারহাট বাজারের পশ্চিমপাশও ভাঙছে।  এভাবে ভাঙতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে মনপুরা সম্পুর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। 

এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি শেলিনা আক্তার চৌধুরী বলেন, মনপুরা পর্যটনের অপার সম্ভবনায় স্থান।  মেঘনার ভাঙন রোধে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব  এমপি শহর রক্ষাবাঁধ প্রকল্প তৈরি করে ব্লক ও ড্যাম্পিং ব্যবস্থা করেছেন।  আল্লাহর রহমতে মনপুরার উত্তর মাথা ভাঙন রোধ হয়েছে।  এ ছাড়াও ভাঙন রোধের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে।  মেঘনার ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

ভোলা/শাহ মতিন টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়