ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

গাংনী হাসপাতালে রোগীদের নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ

মেহেরপুর সংবাদদতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৬:১৬, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০
গাংনী হাসপাতালে রোগীদের নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ

মেহেরপুর ৫০শয্যা বিশিষ্ট গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (হাসপাতালে) রোগীদের জন্য বরাদ্দ খাবার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

সরকারি বরাদ্দে যে খাবার সরবরাহ করার তালিকা রয়েছে, সেসব খাবার কখনো পূরণ না করে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এখানকার রোগীরা।

এ বিষয়ে রোগীসহ সংশিষ্টদের ক্ষোভ বাড়লেও দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিক‌্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. সাদিয়া সুলতানা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত বরাদ্দে প্রতিটি রোগীর জন্য সকালে ও দুপুরে যে ধরনের খাবার ও যে পরিমাণ খাবার সরবরাহ করার কথা, রোগীরা সে পরিমাণ খাবার পাচ্ছেন না। এখানে পরিবেশন করা সকল খাবারই নিম্নমানের। এ হাসপাতালে মাছ, মুরগী ও খাসির গোসত থাকার কথা থাকলেও প্রায় প্রতিদিন পোলট্রি মুরগির মাংস, সিলভার কার্প জাতীয় মাছসহ নিম্নমানের খাবার দেয়া হচ্ছে।

এছাড়া, নিয়মানুযায়ী প্রতিদিনের খাবার তৈরির জন্য ঠিকাদারের লোকজন যা সরবরাহ করবে তার পরিমাপ ও মান পরীক্ষা করার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। কিন্তু বাবুর্চির মুখের কথায় চলছেন আরএমও। তাইঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে আঁতাত করে নিম্নমানের খাবার ও পরিমাপে কম দেয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন চলছে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টম্বর) দুপরে ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রান্না ঘরে বাবুর্চি লাইলি খাতুনের সঙ্গে কথা হয়। আবাসিক মেডি‌ক‌্যাল অফিসারের ভূমিকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আরএমও সশরীরে রান্না ঘরে এসে খাবারের পরিমাপ ও মান দেখেন না। ঠিকাদারের লোকজন যখন রান্না ঘরে খাবার দিয়ে যান, তখন আরএমওকে মোবাইলে তা জানানো হয়। ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা যে বাজার করে দিয়ে যান তা দেখে আমি আরএমও ম্যাডামকে যা বলি তিনি তা লিখে নেন।’

একাধিক রোগীরা জানান, প্রতিদিন পোলট্রি মুরগির মাংস কিংবা সিলভার কার্প জাতীয় মাছসহ নিম্নমানের খাবার দেয়া হয়। যা অনেকে খেতে পারেন না। এসব খাবারের পুষ্টিমান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন রয়েছে।
গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, বর্তমান সরকার সেবাখাতকে জনকল্যাণমূলক করতে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। হাসপাতালে যারা ভর্তি থাকেন তাদের বেশিরভাগই গরিব রোগী। তাদের চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাবারের মান নিয়ে যেহেতু রোগীদের অভিযোগ রয়েছে, তাই এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

এদিকে, খাবার ব্যবস্থাপনার নীতিমালা ও প্রতিদিনের বরাদ্দপত্র দেখতে চাইলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম বলেন, ‘প্রধান সহকারী আসাদুল ইসলাম লিটনের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার ব্যবস্থাপনার নীতিমালা ও প্রতিদিনকার বরাদ্দপত্র সংগ্রহ করুন।’

প্রধান সহকারী আসাদুল ইসলাম লিটনের কাছে গেলেও তিনি অফিসের নানা নিয়মের কথা বলে কাগজপত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

নিন্মমানের খাবার পরিবেশনের বিষয় জানতে চাইলে আরএমও ডা. সাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘তিনবেলা রান্না ঘরে গিয়ে খাবারের পরিমাপ ও মান পরীক্ষা করা আমার পক্ষে সম্ভব না।’

গাংনী হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মহাসিন/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়