ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ভাঙা সড়কে পারাপারে এঞ্জু মাঝির নৌকাই ভরসা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১২:১০, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
ভাঙা সড়কে পারাপারে এঞ্জু মাঝির নৌকাই ভরসা

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়ক ভেঙে গেছে জোয়ারের পানির চাপে।  এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ।  সেই ভাঙা সড়কে পারাপারে এঞ্জু মাঝির নৌকাই এখন ভরসা।

স্থানীয়রা জানান, মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির চাপে প্রায় ৪০ ফুট রাস্তা ভেঙে গেছে।  তীব্র স্রোতে স্থানটি খালে পরিণত হয়েছে।  এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনও চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা করেননি।  এগিয়ে আসেন স্থানীয় এঞ্জু মাঝি।  তিনি নৌকায় করে বিপদে পড়া মানুষদের রাস্তা পারাপার করে দিচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, মতিরহাট-তোরাবগঞ্জ সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করতে একটি অস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করছে উপজেলা প্রশাসন।   তবে ১১ দিন পার হলেও এখনো ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়নি। 

কমলনগরের মতিরহাট জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্র।  এখানে রয়েছে মাছের বড় মোকাম।  দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মাছ কিনে থাকেন।  তাছাড়া প্রতিদিন এ রুটে শত-শত যানবাহন চলাচল করে।

মতিরহাট বাজার কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান লিটন বলেন, কয়েক দফা মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়কটি ভেঙে গিয়ে চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।  এজন্য এখানকার ব্যবসায়ী, জেলে ও আড়তদারদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে।  বর্তমানে যাতায়াত বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

নৌকার মাঝি এঞ্জু মিয়া জানান, রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় চলাচলে কষ্ট হচ্ছে মানুষের।  প্রশাসনও বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছে না।  এ অবস্থায় নৌকায় মানুষ পারাপার করে ভালই আয়ও হচ্ছে।  প্রতিদিন নৌকা ভাড়া ও খরচ বাদ দিয়ে তাদের চার জনের প্রায় হাজার টাকার বেশি থাকে।

জাকির হোসেন নামে এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, আগে গাড়ি নিয়ে মোকামে প্রবেশ করতেন। এখন রাস্তা ভাঙা থাকায়, সেটি সম্ভব হচ্ছে না।  এজন্য নৌকায় করে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন।  এছাড়া ঘাটে গাড়ি না যাওয়ায় খরচ বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।

কমলনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক সাগর বলেন, মতিরহাট-তোরাবগঞ্জ সড়কে যান চলাচল চালু করতে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে।  কয়েক দিনের মধ্যেই কাজটি শেষ হবে।  তবে স্থানীয়রা নৌকায় রাস্তা পারাপার হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন বিকল্প ব্যবস্থা করেনি। 

অস্বাভাবিক জোয়ারের চাপে একই অবস্থা এ উপজেলার লুধুয়া-হাজিরহাট সড়কেও।  অপরদিকে সেতু ধ্বসে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে লরেন্স-নবীগঞ্জ সড়কেও।  এছাড়াও মধ্য কালকিনির কলোনির ব্রিজসহ কমলনগরের ১০টি ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে গেছে।  চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে বলিরপুল-নাছিরগঞ্জ, মাতাব্বরহাট, কাদিরপন্ডিতের হাটসহ বেশ কয়েকটি রাস্তা।  সব মিলিয়ে বেহাল এ উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা।

এ অবস্থায় প্রশাসন দুই একটি রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট সংস্কার করলেও বেশিরভাগই বেহাল অবস্থায়।  স্থানীয় বাসিন্দারা নিজ নিজ উদ্যোগে তাদের জোয়ারের ক্ষত সমাধানের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ফরহাদ/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়