ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সখীপুরে আবারও নৃত্যশিল্পীকে উলঙ্গ করে মারধর: পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫২, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৮:১০, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
সখীপুরে আবারও নৃত্যশিল্পীকে উলঙ্গ করে মারধর: পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ

মামলা তুলে না নেওয়ায় টাঙ্গাইলের সখীপুরে সুমন আহমেদ নামের এক নৃত্যশিল্পীকে আবারও উলঙ্গ করে মারধর করা হয়েছে। 

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে কাহারতা বাসার সামনে থেকে তুলে বনের ভিতরে নিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও তার মাথার চুল কেটে এবং তার মুখে কালি মাখিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
 
রাতে সখীপুর থানায় বিষয়টি অবহিত করলে কোন পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। এতে করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নৃত্যশিল্পী সুমন। তাই প্রশাসনসহ সবার কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি। 

সুমন আহমেদ জানান, বুধবার রাতে সখীপুরের বাসার সামনে থেকে ৫/৬ জন চোখ মুখ বাঁধা সন্ত্রাসীরা তাকে তুলে নিয়ে বনের ভিতের নিয়ে যায়। সেখানে বৃহস্পতিবারের মধ্যে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। মামলা তুলতে রাজি না হওয়ায় কালা শরীফ, সুপ্তসহ ৫/৬ আসামি তাকে মারধর করে। তাদের মধ্যে একজন মাথায় প্রশ্রাব করে দেয়। অন্যজন কাচি ও ব্লেড দিয়ে তার মাথার চুল এলোমেলো করে কেটে ও তার মুখে কালি দিয়ে বিবর্ণ করে দেয়। পরে রাত তিনটার দিকে তাকে বাড়ির সামনে এসে ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। পরে তিনি থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানালেও পুলিশ কোন প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। 

সুমন আহমেদ আরও বলেন, ‘পুলিশ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিলেও আমাকে কোন নিরাপত্তা দিতে পারেনি। আমাকে বারবার উলঙ্গ করে কালা শরীফ, সুপ্তসহ আসামিরা মারধর করছে। মারধরের পর কালা শরীফ, সুপ্তসহ আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। বিষয়টি পুলিশকে জানালেও পুলিশ কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আমি পুলিশ প্রশাসনসহ সকলে কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাই। আমি নিরাপত্তা ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’ 

এই ব্যাপারে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন জানান, ইতিমধ্যে দ্বিতীয়বার এ ঘটনার জন্য মামলা নেওয়া হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত ৬ আগস্ট বাড়িতে যাওয়ার সময় সখীপুর জামতলা এলাকায় আসামিরা তিন মোটরসাইকেল নিয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে পথ গতিরোধ করে। পরে প্রধান আসামি কালা শরীফের নির্দেশে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সুমন আহমেদকে আসামিরা মোটরসাইকেলে তুলে জামতলা লিচু বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে আসামিরা সুমন আহমেদকে কিল, ঘুষি, চর-থাপ্পর ও লাথি মারে। এরপর জোর করে তার শরীরের সকল কাপড়-চোপড় খুলে নাচতে বলে। নাচতে রাজি না হওয়ায় সুমনকে আরও মারধর করা হয়। সুমন আহমেদ আসামিদের কাছে ক্ষমা চাইলে তারা আরও বেধরক মারধর করতে থাকে। এক সময় বাধ্য হয়ে সুমন উলঙ্গ হয়ে নাচতে শুরু করলে আসামিরা তার নাচের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনার একদিন পর ৮ আগস্ট সুমন বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সখীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হচ্ছেন উপজেলার দড়িয়াপুর গ্রামের জলিল তালুকদারের ছেলে কালা শরীফ (২৫), সখিপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে প্রিন্স মাহমুদ (২০), কালিদাস গ্রামের মো. হাসিব মিয়া (১৯), সফি মিয়ার ছেলে সুপ্ত (১৬), মো. মামুন মিয়া (২২) । 

মামলার পর প্রিন্স ও মামুনকে গ্রেপ্তার হলেও প্রধান আসামিসহ অন্যারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। 

শাহরিয়ার সিফাত/সাজেদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়