ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিচার না পেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি মুক্তিযোদ্ধাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০  
বিচার না পেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি মুক্তিযোদ্ধাদের

রাজশাহীতে আয়োজিত মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধারা বলেছেন, রাজশাহী মেডিক‌্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছে ইন্টার্নি নামের কিছু মাফিয়া চিকিৎসক। এ হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আর বিচার না হলে মুক্তিযোদ্ধারা শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করবেন। পুরো রাজশাহী আগুনে জ্বলবে।

গত ২ সেপ্টেম্বর বুধবার রামেক হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলী এবং তার সন্তান শিক্ষা কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলামের ওপর ইন্টার্নি চিকিৎসকদের হামলার ঘটনায় রাজশাহী জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধারা এ কথা বলেন। 

রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাজশাহী মহানগর শাখার সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে এবং সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ রাজশাহী মহানগর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, চিকিৎসা অবহেলায় মৃত্যু এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। এছাড়া পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার জন্য রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজশাহী মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

বক্তারা বলেন, রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে যে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এটি নিরপেক্ষ না। তদন্ত কমিটির সদস্যরা সকলেই চিকিৎসক। একারণে তারা ইন্টার্নি চিকিৎসকদের রক্ষা করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। অচিরেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা না হলে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। যেসব ইন্টার্নি চিকিৎসকরা হামলার সাথে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আর এটি না হলে আমরাই তাদের বিচার করব।

মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ভালো চিকিৎসক হবার আগে ভালো মানুষ হতে হবে। কিন্তু চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা দেন না। শুধু মুক্তিযোদ্ধারাই নন, দেশের সাধারণ মানুষও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। কিছু চিকিৎসককে মনে হয়, এরা মাফিয়া গ্যাংয়ের সদস্য। আর হাসপাতালের পরিচালক জামিলুর রহমান মাফিয়া সর্দার। আর ইন্টার্নি চিকিৎসকরা তার সহযোগী।

তারা আরও বলেন, রামেক হাসপাতালে বর্তমানে দুর্নীতি চরমে পৌঁছেছে। আর এ দুর্নীতি আড়াল করতেই হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেন না পরিচালক। আমরা অবিলম্বে রামেক হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চাই। হাসপাতালের দুর্নীতি সাংবাদিকরা প্রকাশ করেন। জাতি জানতে চায়, চিকিৎসক নামধারী স্বাস্থ্য প্রশাসকরা দেশের অর্থ কীভাবে লুট করছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপির উদ্দেশে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সন্তান। আর রাজশাহী সদরের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি রামেক হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি। এরপরেও মুক্তিযোদ্ধারা হাসপাতালে শারীরিক নির্যাতন এবং লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন। আপনারা দুজন রাজশাহীর জনপ্রতিনিধি। আপনারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। আমরা অপেক্ষায় আছি আপনার কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন—  মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজা, কবিকুঞ্জের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামানিক, মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম, রবিউল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, হাকিম আতাউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মোর্শেদ রঞ্জু, মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন মোল্লা, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।

রাজশাহী/তানজিমুল/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়