ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

উদ্বোধনের অপেক্ষায় রাঙামাটির স্বপ্নের সেতু

বিজয়ধর, রাঙামাটি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০০, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১০:২১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০
উদ্বোধনের অপেক্ষায় রাঙামাটির স্বপ্নের সেতু

রাঙামাটি জেলার চেঙ্গী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সংযোগ সড়কের অবশিষ্ট কাজ শেষ হলে দু-তিন মাসের মধ্যে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।  

কাপ্তাই হ্রদের কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হয় রাঙামাটির নানিয়ারচর, লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দাদের। চেঙ্গী নদীর ওপর নির্মিত ৫০০ মিটারের সেতুটি স্বপ্ন দেখাচ্ছে দুর্গম এই তিন উপজেলার মানুষকে।

এই সেতু চালু হলে একদিকে যেমন সড়ক যোগাযোগ বাড়বে, তেমনি এখানকার মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে নভেম্বর মাসে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বর্তমান সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি নানিয়ারচর উপজেলায় এক জনসভায় এই সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।  

আগামী ডিসেম্বর মাসে সেতুটি উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেতু প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা। 

নানিয়ারচর সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু। এটির দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার এবং প্রস্থ ৯.৮ মিটার। এই সেতু প্রকল্পের মোট বাজেট ২২৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য খরচ হয়েছে ৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

সেতুটির সঙ্গে সংযোগ সড়ক রয়েছে ২.২ কিলোমিটার। সেতুটি চালু হলে এটি দিয়ে রাঙামাটির লংগদু হয়ে খাগড়াছড়ির দিঘীনালা দিয়ে বাঘাইছড়ির মারিশ্যা ও সাজেক পর্যন্ত যাওয়া যাবে।

সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই সেতুটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইসি ব্রিগেডের ২০ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) ইউনিট। সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মিত হলে দ্রুত সাজেক ভ্যালিতে পৌছানো যাবে।

নানিয়ারচরের স্থানীয় ব্যবসায়ী শেখ মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, সেতু দিয়ে গাড়িতে করে রাঙামাটি থেকে নানিয়ারচর আসতে সময় লাগবে মাত্র এক ঘণ্টা। অথচ লঞ্চে যাওয়া-আসায় প্রায় সারা দিন কেটে যায়।  

নানিয়ারচরের সাবেক ছাত্রনেতা রিপন দাশ বলেন, সেতু চালু হলে এখানকার মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব কিছুর অচলবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে। নানিয়ারচর সেতুর যে সংযোগ সড়ক হচ্ছে, এটির মাধ্যমে লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি হবে।

নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, সেতুটি হওয়ায় এখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় অনেক সুবিধা পাবে নানিয়ারচরবাসী। 

সেতুর প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর মো. মিজানুর রহমান ফকির বলেন, এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় সেতু। এটির মূল উদ্দেশ্য রাঙামাটি জেলা সদরের সঙ্গে লংগদু উপজেলার সংযোগ স্থাপন করা।  

তিনি জানান, সেতুর কাজ তিন বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জমি অধিগ্রহণে কিছুটা বেশি সময় লাগছে। তিনি আশা করেন ডিসেম্বরে সেতুর উদ্বোধন হবে। 

ঢাকা/বকুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়