ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

কাপ্তাই সড়কে রমরমা অবৈধ কাঠ বাণিজ‌্য

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১১:৫১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
কাপ্তাই সড়কে রমরমা অবৈধ কাঠ বাণিজ‌্য

কাপ্তাই সড়ক হয়ে পাচার হয়ে আসা একটি কাঠের চালান চট্টগ্রামে আটক করে বন বিভাগ ও র‌্যাব।

পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত বনাঞ্চল কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি হতে কাপ্তাই সড়ক পথে বন কর্মকর্তাদের সহায়তায় রমরমা কাঠ পাচার চলছে।

মূলত কতিপয় বন কর্মকর্তার সহায়তায় এই কাঠ পাচারে উৎসাহ পাচ্ছেন পাচারকারীরা।

পক্ষান্তরে, কাপ্তাই সড়কে দায়িত্বপালনকারী বন বিভাগের চেক স্টেশন কর্মকর্তা পিংকি কুমার ধর নবীন জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তাদের ঘুষের চাহিদা মিটাতে কাঠ পাচারে ছাড় দিতেই হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা কাপ্তাই, রাঙ্গুনিয়া, বাঙ্গালহালিয়া, চন্দ্রঘোনাসহ আশেপাশের এলাকা থেকে দিনে-রাতে রমরমা অবৈধ কাঠ পাচার হয়ে আসছে কাপ্তাই সড়ক হয়ে। অবৈধ কাঠ পাচার প্রতিরোধের জন্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন পোমরা এলাকায় বন বিভাগের একটি চেক স্টেশন রয়েছে।

কিন্তু এই চেক স্টেশন কর্মকর্তার নেতৃত্বেই সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ কাঠ পাচার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিযোগ রয়েছে অবৈধ কাঠের ট্রাক বা পিকআপ থেকে স্টেশন কর্মকর্তা আদায় করেন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আবার বৈধ পারমিটের কাঠের ট্রাক থেকেও ট্রানজিট পাশ (টিপি) চেক করার নামে ঘুষ নেয়া হয় ২ থেকে ৫ হাজার টাকা। প্রতিমাসে পোমরা চেক স্টেশনে লাখ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয় রীতিমত প্রকাশ্যেই। দিনের পর দিন এভাবে রমরমা কাঠ পাচার ও ঘুষ বাণিজ্য চললেও চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে নির্বিকার ভূমিকা পালন করেছেন।

এদিকে, কাপ্তাই সড়ক হয়ে পাচার হয়ে আসা ট্রাক ও কাভার্টভ্যান ভর্তি কাঠ কোনো কোনো সময় চট্টগ্রাম নগরীতে র‌্যাব এবং চট্টগ্রাম শহর রেঞ্জের বন কর্মকর্তারা আটক করতে সক্ষম হন। তবে যেসব বন কর্মকর্তার সহায়তায় এই বিপুল পরিমাণ কাঠ পাচার হয়ে আসছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের পোমরা চেক স্টেশন কর্মকর্তা পিংকি কুমার ধর নবীন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাসিক ঘুষের দাবি মেটাতেই অবৈধ কাঠ পাচারে সহায়তা করা ছাড়া উপায় থাকে না। করোনাকালেও ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তারা মাসিক ঘুষের অংক কমাননি। এর ফলে বিভিন্ন কাঠ বোঝাই গাড়ি থেকে স্টেশনে টাকা আদায় করতে বাধ্য হন তারা। 

বৈধ কাঠের ট্রাক থেকেও কেন চাঁদা নেওয়া হয়, জানতে চাইলে পিংকি কুমার ধর জানান, এটাই নিয়ম। স্টেশনে বছরের পর বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে। স্টেশনের খরচ মেটানোর জন্য কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করা হয়।

এদিকে, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগীয় কর্মকর্ত বখতেয়ার নুর সিদ্দিকী রাইজিংবিডিকে জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ উত্তর বন বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ কাঠ পাচার বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম শহর রেঞ্জের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন আন্তঃ উপজেলা সড়ক হয়ে অবৈধ কাঠ পাচার হয়ে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রবেশ করলে অভিযানে আটক করা হয়। এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

চট্টগ্রাম/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়