ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

গ্রামীণ নারীর অনুপ্রেরণা সালমা

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১০:২৬, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
গ্রামীণ নারীর অনুপ্রেরণা সালমা

সালমাকে দেখে অনেকেই তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন

সালমা আক্তার। সাহস, ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম। এই তিনের সমন্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। উপজেলার একমাত্র সফল নারী চাষি সালমা। নিজের কোনো জমিজমা নেই। কিন্তু থেমে যাননি তাতে। অন‌্যের জমি লিজ নিয়ে চাষ করেছেন বারোমাসি তরমুজ।

সালমার বারোমাসি তরমুজ চাষের গল্প গ্রামের প্রত্যেকের মুখে মুখে। সে এখন গ্রামের রোল মডেল। তাকে দেখে কৃষিতে এগিয়ে আসছেন অনেক নারী। অনেকেই মনে করেন, কৃষিতে তার সাফল্য ঈর্ষানীয়। সালমার বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের আঙ্গিয়াদী গ্রামে।

কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলার আঙ্গিয়াদী গ্রামের একমাত্র নারী চাষি সালমা। সফল চাষি হিসেবে গ্রামে তার বেশ সুনাম রয়েছে। কৃষিকাজে সালমার আগ্রহ ও পরিশ্রম করার মানসিকতা অকল্পনীয়। কৃষি কাজকে আরো সম্প্রসারিত করতে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য গত বছর কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে ইন্দোনেশিয়া পাঠানো হয়। আর প্রশিক্ষণ শেষে আত্মবিশ্বাসী সালমা বারোমাসি তরমুজ চাষে সেটি প্রয়োগ করে বাজিমাত করেছেন।

সালমা আক্তার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমাদের কোনো জমিজমা নেই। জমি লিজ নিয়ে তরমুজ চাষ করেছি। ১০ শতাংশ জমিতে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচে তরমুজ চাষ করেছি। এখন জমিতে পাঁচ শতাধিক তরমুজ রয়েছে। প্রতিটি তরমুজ আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের। আশা করি, প্রতি কেজি তরমুজ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হবে। তাছাড়া, অসময়ে তরমুজ হওয়ায় অনেকে তরমুজ কিনতে আসছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘খুবই ভালো লাগে যখন কেউ আমার কাছে চাষ পদ্ধতি শিখতে আসে। নিজ গ্রাম ছাড়াও আশেপাশের গ্রামের মানুষজন আমার তরমুজ ক্ষেত দেখতে আসেন। কেউ কেউ এ পদ্ধতিতে তরমুজ চাষের পরামর্শ নিয়ে যান।’
সালমার স্বামী আতাবুর বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই প্রথম বারোমাসি তরমুজ চাষ করেছি। এই চাষে সফলতাও আসতে শুরু করেছে। আশা করছি, বিক্রিও ভালো হবে। এর সব কৃতিত্ব আমার স্ত্রী সালমার। শুধু তার অদ্যম সাহস, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসের কারণে সফলতা এসেছে।’

স্থানীয় কৃষক রমিজ উদ্দিন জানান, প্রতিদিনই অনেক মানুষ তরমুজের ক্ষেত দেখতে আসছেন। অনেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। তাদের সফলতা দেখে তরমুজ চাষে আমাদেরও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কম টাকা খরচ করেও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে অল্প জমিতেও ভালো ফলন সম্ভব, এটাই প্রমাণ করেছেন সালমা।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল হাসান আলামিন বলেন, ‘কৃষক দম্পতির সাফল্য দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও বারোমাসি তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক তরমুজ চাষে অনেক ফলন পেয়েছে তারা। বাজার মূল‌্য ভালো পাওয়া যাবে।’

কিশোরগঞ্জ/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়