ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কবুতর পালনে ফিরে আসছে সচ্ছলতা

সিদ্দিক আলম দয়াল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৪, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১১:২০, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
কবুতর পালনে ফিরে আসছে সচ্ছলতা

ভোর হতে না হতেই বাকবাকুম বাকবাকুম ডাকাডাকি। সামান‌্য খাবার দিলেই দল বেঁধে উড়ে আসে রঙ-বেরঙের বাহারি কবুতর। তখন তাদের মিষ্টি ডাকে বাড়ির উঠোন গমগম করে। চোখ জুড়িয়ে যায়।

গাইবান্ধার কয়েক ইউনিয়নের বাড়ি বাড়ি এমন দৃশ‌্য চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে ঘাগোয়া ও গিদারী ইউনিয়নের প্রায় গ্রামেরই চিত্র এমন। বিভিন্ন জাতের কবুতর খামার আকারে পালন করে এসব গ্রামের আগের অবস্থা পাল্টে গেছে। সাবলম্বী হতে শুরু করেছেন অধিকাংশ গ্রামবাসীই। এতে তাদের সংসারে সুখ শান্তি আর সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের কবুতরের খামার গড়েছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার উত্তর ঘাগোয়া, দক্ষিণ ঘাগোয়া, মালিবাড়ি, গিদারী, দাড়িয়াপুর, রুপার বাজারসহ অন্তত ৮টি গ্রামের বাসিন্দারা। আগে সখ করে বাড়িতে দু-চার জোড়া কবুতর পালন করা হতো। কিন্তু এখন লাভের আশায় এসব গ্রামের বাসিন্দারা খামার আকারে কবুতর পালনের দিকে ঝুঁকছেন। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ছোট বা বড় আকারের কবুতর খামার রয়েছে। আর এসব খামারে সাধারণ কবুতরের পাশাপাশি ঝর্ণা সেটিং, বুলু সেটিং, গিরিবাজ, হলুদ মুক্কি, লাল মুক্তি, লাল মুক্তি, লাক্কা, রাহুল, নান, লোটন নামের কবুতর পালন করা হচ্ছে।

খোলাহাটির রাজু আহম্মেদ, জয়; রুপার বাজারের আতোয়ার রহমান, সোহেল মিয়া; দাড়িয়াপুরের সালাম মিয়া, মজিবর রহমান, মর্জিনাসহ শতাধিক নারী-পুরুষ কবুতর পালনকে এখন পেশা হিসেবে নিয়েছেন। প্রথম প্রথম তারা সখের বশে কবুতর পালন করতেন। বর্তমানে কবুতর পালন করে তারা সফল হয়েছেন। তাদের এই সাফল‌্য দেখে এলাকার আরও অনেক বেকার যুবক কবুতরের খামার তৈরিতে আগ্রহী হচ্ছেন।

আনালেরতাড়ি গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কবুতরের রোগ-বালাই কম হয়। সামান‌্য পরিচর্যা করলে এখান থেকে ভালো আয় করা সম্ভব। তাই খামার আকারে কবুতর পালন শুরু করি।’ 

খামারি মজিবর রহমান বলেন, ‘অল্প পুঁজিতে কবুতর পালন করে ভালো লাভ করা যায়। বাড়িতে বসে এখন প্রতিমাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার কবুতর বিক্রি করি। এতে লাভ আসে অন্তত ১৮ হাজার টাকা।’

গিদারী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ইদু সরকার বলেন, ‘গাইবান্ধা শহর থেকে ঘাগোয়া ও গিদারী ইউনিয়নের গ্রামের দিকে তাকালে ভিন্নচিত্র নজরে পড়ে। গবাদী পশুর পাশাপাশি এখানকার মানুষ কবুতর পালনে আগ্রহী হচ্ছেন।’ 

চেয়ারম‌্যান আরও বলেন, ‘কম খরচে ভালো লাভ হওয়ায় কবুতর পালনে একজনকে দেখে অন্যরা উৎসাহিত হচ্ছেন। কবুতরের খামার গড়তে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কবুতর পালনে আরও অনেকেই আগ্রহী হবেন। তাই, এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

জানতে চাইলে ঘাগোয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান রিংকু বলেন, ‘দিন দিন এই এলাকায় যে হারে কবুতরের খামার বাড়ছে, তা খুবই আশার খবর। এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণের ব‌্যবস্থা করা হলে এলাকার মানুষ আরও বেশি উপকৃত হবেন। এছাড়া, এখানকার খামারের পালিত কবুতরের একটা বাজার তৈরি করতে পারলে খামারিরা আরও ভালো লাভবান হবেন।’ এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন‌্য তিনি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 

গাইবান্ধা/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়