ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

দুর্নীতির অভিযোগের শুনানিতে যাননি রাবি উপাচার্য

বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০  
দুর্নীতির অভিযোগের শুনানিতে যাননি রাবি উপাচার্য

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ডাকা শুনানিতে যাননি উপাচার্য অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইউজিসির মিলনায়তনে উপাচার্যের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য শুনানির দিন ধার্য ছিলো।

উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ইউজিসির তদন্ত কমিটিকে ‘কর্তৃত্ববিহীন ও বেআইনি’ দাবি করে শুনানিতে যাননি। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া অসুস্থতা দেখিয়ে এতে অংশ নেননি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের লিখিত অভিযোগ আমলে নিয়ে এ শুনানির আয়োজন করে ইউজিসি। গত বৃহষ্পতিবার অভিযোগকারীদের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম বলেন, ‘শুনানিতে অধ্যাপক আব্দুস সোবহান উপস্থিত হননি। আর অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া শারীরিক অসুস্থতার কারণে থাকতে পারবেন না বলে আগে থেকেই জানিয়েছিলেন।’

তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘তদন্ত কমিটি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তদন্তের প্রয়োজন যা যা করা দরকার, সব করবো। কাউকে ডাকার প্রয়োজন হলে ফের চিঠি দিয়ে ডাকা হবে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আমি এরই মধ‌্যে চিঠি দিয়ে কর্তৃত্ববিহীন তদন্ত কমিটির তদন্ত বন্ধ করতে অনুরোধ করেছি। কারণ ইউজিসির তদন্ত কমিটি গঠন করার এখতিয়ারই নাই। কমিটি গঠনে কমিশনের যে অ্যাক্ট, সেই অ্যাক্টে এই ক্ষমতা নাই। তাছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন করতে হলে উপাচার্যের মর্যাদার এক ধাপ উপরের পদমর্যাদার সদস্যদের দিয়ে করতে হবে। যেহেতু ইউজিসির গঠিত তদন্ত কমিটিতে এর ব্যত্যয় ঘটেছে, সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

অন্যদিকে, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার মোবাইলে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়।

জানা যায়, চলতি বছরের গত ৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) দাখিল করেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশ।

অভিযোগপত্রে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্য এবং উপাচার্য কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে ধোঁকা দেওয়া ও শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল করে উপাচার্যের মেয়ে ও জামাতাকে নিয়োগ দেওয়া, এডহক ও মাস্টাররোলে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যসহ ১৭টি অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। 

পরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অভিযোহসমূহ তদন্তে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কমিটি উভয় পক্ষের বক্তব্য উপস্থাপনে এ উন্মুক্ত শুনানির আয়োজন করেছে।

তবে গত ৯ সেপ্টেম্বর ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি ডাকা গণশুনানিকে বেআইনি, আদালত অবমাননাকর ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খর্বের শামিল বলে উল্লেখ করে উপাচার্য এম আবদুস সোবহান।

গত বৃহষ্পতিবার শুনানিতে অভিযোগের দলিলপত্রসহ বক্তব্য উপস্থাপন করেন অভিযোগকারী শিক্ষকরা। এতে অভিযোগকারী শিক্ষকদের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী, ক্রপ সায়েন্স অ‌্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মু. আলী আসগর, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক জিন্নাত আরা ও সহকারী অধ্যাপক সোলাইমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

রাবি/সাইফুর/সাজেদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়