খুলনায় ফারইস্টের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
খুলনায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানীর বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
মেয়াদপূর্তির পরও প্রতিষ্ঠানটি বীমার টাকা পরিশোধ করছে না। তিন মাসের মধ্যে সমুদয় পাওনা পরিশোধের বিধান থাকলেও বছর পেরিয়ে গেলেও টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহক।
অভিযোগে জানা গেছে, খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দেয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. কামাল উদ্দিন ২০০৯ সালে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে একটি ডিপিএস ও পরের বছর একটি যুগল মেয়াদী বীমা করেন (ডিপিএস নং ০৯০৭০০১৫৭৭)। অনেক কষ্টে তিনি ডিপিএসটির মেয়াদ শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়াম জমা দিয়েছেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যার মেয়াদপূর্তি হয়। কিন্তু অনেক আশা নিয়ে টাকা তুলতে যেয়ে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন তিনি।
গ্রাহক কামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, কয়রা শাখা অফিসে টাকা তুলতে গেলে ৩/৪ মাস দেরি হবে বলে জানানো হয়। এ কারণে তিনি নির্বাহী রশিদসহ সকল ডকুমেন্ট অক্টোবর মাসে খুলনা সার্ভিস সেন্টারে জমা দেন। তাকে বলা হয়েছিল সর্বোচ্চ ৩ মাসের মধ্যে টাকা পেয়ে যাবেন। তবে প্রায় ১ বছর পার হয়ে গেলেও এখনও টাকা পাননি তিনি। এরই মধ্যে কয়েকবার টাকার জরুরি প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি।
এদিকে, দীর্ঘদিন পরে চলতি বছরের জুলাই মাসে ম্যাচুরিটি সেকশন থেকে ‘জমাকৃত ডকুমেন্ট হারিয়ে গেছে’ বলে তাকে জানানো হয়। তখন তিনি যথাযথ নিয়মে নিজ খরচে ডুপ্লিকেট ফাইল তৈরি করে পুনরায় জমা দেন। অফিস থেকে বলা হয় এবার স্পেশালভাবে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে, কবে হাতে পাবেন তার সঞ্চিত টাকা সেটা নির্দিষ্ট করে এখনো বলতে পারছে না কোন কর্মকর্তা। এমনকি আদৌও পাবেন কিনা সেই শঙ্কায় আছেন ভূক্তভোগী গ্রাহক।
ভূক্তভোগী গ্রাহক কামাল উদ্দিন বলেন, কষ্টে সঞ্চিত টাকা যদি বিপদের সময় না পাই তাহলে এই সঞ্চয় করে লাভ কি? ‘বীমার টাকা পেতে জুতার তোলা থাকেনা’ প্রচলিত এই কথার বাস্তব প্রমাণ পেলাম ফারইস্টে এ বীমা করে।
অপরদিকে, রূপসার ইলাইপুর এলাকার বাবুল ঢালী বলেন, আমি সকল কাগজপত্র দিয়েছি প্রায় ৮/৯ মাস আগে। অফিস থেকে বলেছে সিরিয়াল নম্বর পড়েছে। শুধু তারা আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত টাকা দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
একইভাবে পূর্ব রূপসা বাগমারা এলাকার গ্রাহক আকলিমার স্বামী জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বই জমা দিয়েছি করোনা শুরু হওয়ার আগে। আমাকে চলতি মাসের মধ্যে টাকাটা দেয়ার কথা বলেছে। তবে কতদূর কি হয়, না আসা পর্যন্ত ঠিক বলা যাচ্ছে না।’
এছাড়া, গ্রাহক আ. হাই (বীমা নম্বর ০৯০৭০০১৫৮০), মনোয়ারা খাতুন (বীমা নম্বর ০৯০৭০০১৫৭৯), ছালমা খাতুন (বীমা নম্বর ০৭০০০১৪৭৭০), আকলিমা বেগম (বীমা নম্বর ০৯০৭০০১৭৪৮) ও জেসমিন আরাসহ অসংখ্য গ্রাহকের পাওনা পরিশোধে ফারইস্ট নানা তালবাহানা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে’র খুলনা ডিভিশনাল ইনচার্জ মোস্তফা জামান হামিদী স্বাধীন বলেন, ‘গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। দ্রুত টাকা পরিশোধ করা হবে। চিন্তা না করার জন্য তাদেরকে বলে দিয়েছি।’
খুলনা/নূরুজ্জামান/বুলাকী
আরো পড়ুন