ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল অপারেশনে যাওয়ার সময় পিছিয়েছে 

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৮, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১২:৫৮, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল অপারেশনে যাওয়ার সময় পিছিয়েছে 

পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির একটি বড় প্রকল্প। ২০১৯ সালের মধ্যেই এই টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কাগজে কলমে চলতি বছরের জুন মাস থেকেই এই টার্মিনালে জাহাজের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হবার কথা ছিল। 

কিন্তু নির্ধারিত সময়ে এগুয়নি কিছুই। প্রকল্পের কাজ শুরু করতে ৬ মাস বিলম্ব এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে এই টার্মিনালের নির্মাণ কাজ পিছিয়ে গেছে কমপক্ষে এক বছর।কর্তৃপক্ষ এখন আগামী ২০২১ সালের জুনে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ শেষ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি একটি বড় প্রকল্প। ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়।২০১৯ সালেই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করে মুজিব বর্ষে টার্মিনাল অপারেশনে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সময়ের হিসেবে কাজ এগিয়েছে মাত্র ৬০ শতাংশ। কাজের ধীর গতি এবং করোনা পরিস্থিতি এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পিছিয়ে দিয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলম রাইজিংবিডিকে জানান, মুজিব বর্ষে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের কাজ শেষ করে অপারেশনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশে দেখা দিলে ক্রমশ সব ধরণের কাজে ব্যাঘাত ঘটে। সেই প্রভাব এই টার্মিনালের নির্মাণ কাজও বাধাগ্রস্থ হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই টার্মিনালটি অপারেশনে যেতে পারবে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ বুঝে না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারিতে সেনাবাহিনীর কাছে প্রকল্পের কাজ হস্তান্তর করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সেনাবাহিনী প্রকল্পের কাজ শুরু করে। এতে প্রকল্পের কাজ শুরু করতেই ৬ মাস বিলম্ব হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমার ফারুক জানান, বন্দরের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল প্রকল্পে রয়েছে ৩২ একর জায়গায় ৬০০ মিটার দীর্ঘ জেটি। যেখানে ৩টি জাহাজ বার্থং করতে পারবে। এছাড়া, থাকবে ২২০ মিটার দীর্ঘ একটি ডলফিন জেটি। এক লাখ ১২ হাজার বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ ইয়ার্ড এবং রাস্তা। ২ হাজার ১২৮ বর্গমিটার কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশন শেড (সিএফএস), ৬ মিটার উচ্চতার ১৭৫০ মিটার কাস্টমস বন্ডেড ওয়াল, ৫৫৮০ পোর্ট অফিস বিল্ডিং, ১২০০ বর্গমিটার যান্ত্রিক ও মেরামত কারখানা, ২৫০০ মিটার রেলওয়ে ট্রেক নির্মাণ, ৪২০ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ, ৪ লেন বিশিষ্ট শূন্য দশমিক ৭৫ কিমি. এবং ৬ লেন বিশিষ্ট ১ কিমি. রাস্তা স্থানান্তরপূর্বক পুনঃনির্মাণ, সিকউরিটি পোস্ট, গেস্ট হাউস, ফুয়েল স্টেশন এবং লেবার শেড।

এছাড়া, টার্মিনাল পরিচালনা কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে থাকবে ২টি ফায়ার ট্রাক, ১টি ফায়ার কার, ৩টি নিরাপত্তা পেট্রোল কার, ১টি অ‌্যাম্বুলেন্স, ৪টি গ্যান্ট্রি ক্রেন, ৪টি স্ট্রাডেল কেরিয়ার, ৪টি রিচ স্ট্যাকার, ৮টি রাবার টায়ারড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি), ৪টি লো-মাস্ট ফর্ক লিফট, ৪টি ফর্ক লিফট, ১টি রেইল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরএমজি), ২টি টাগ বোট, ২টি পাইলট বোট এবং ২টি ফাস্ট স্পিড বোট।

চট্টগ্রাম/রেজাউল/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়