ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নাটোরে কৃষকের স্বপ্ন তলিয়ে গেছে উজানের ঢলে 

নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৩, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৮:০৯, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
নাটোরে কৃষকের স্বপ্ন তলিয়ে গেছে উজানের ঢলে 

নাটোরে আবারও উজান থেকে নেমে আসা পানিতেই বন্যায় কৃষকের স্বপ্ন তলিয়ে গেছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ও প্রথম দফা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে জেলার কৃষকরা তাদের জমিতে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিলেন। তাদের জন্যে ছিল কৃষি বিভাগের প্রণোদনা। রোপা আমন ধান ও মাসকালাই ডাল রোপণ কার্যক্রমের আবাদি জমি ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। সবজি এবং ডাল ফসলেও অগ্রগামী ছিলেন কৃষকরা। কিন্তু ধান, সবজি আর ডালের আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। 

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬৭ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। প্রথম দফার বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনা করে কৃষি বিভাগ বিল এলাকার কৃষকদের জন্যে প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০টি বীজতলা তৈরি করে দিয়েছিল। সরকারি এ সহায়তা কৃষকদের জন্যে সহায়ক হয়েছে। রোপা আমনের আবাদি জমি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।

মাসকালাই ডাল চাষে কৃষি বিভাগ জেলার ৫০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে তাদের এক বিঘা করে জমি চাষে প্রয়োজনীয় সার ও বীজ বিতরণ করে। প্রায় চার লাখ টাকার এ প্রণোদনার প্রতিদান জেলার কৃষকরা দিয়েছেন। ১৮৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাসকালাই ডাল চাষ হয়েছে ২৫৫ হেক্টরে।

নাটোর জেলায় সবজি চাষে জেলার দুই হাজার ৬০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে কৃষি বিভাগ ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দিতে শুরু করেছে ১৩ প্রকার শাক-সবজির বীজ। চলমান সবজি চাষের আবাদি জমি বর্তমানে তিন হাজার ৭২৫ হেক্টর।

বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা গতকাল বুধবার ছিল ৫২ সেন্টিমিটার। উজান থেকে নেমে আসা পানি এবং গত তিনদিনে ২০ মিলিমিটার করে বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি বিলে ঢুকে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে চলনবিল ও হালতি বিলের আবাদি জমি তলিয়ে গেছে।

চলনবিল ও হালতিবিল অধ্যুষিত সিংড়া, গুরুদাসপুর ও নলডাঙ্গা উপজেলায় বৃহস্পতিবার এক হাজার ২৭৬ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান, ৩৭ হেক্টর জমির শাক-সবজি এবং দুই হেক্টর জমির মাসকালাই ডালের আবাদ পানিতে ডুবে তলিয়ে গেছে। অবস্থার উন্নতি না হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিধি আরও বাড়বে বলে কৃষি বিভাগ ধারণা করছে।

হালতি বিলের বাঁশিলা দক্ষিণ পাডা এলাকার কৃষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘সাতদিন ধরে আমার এক বিঘা জমির ধান পানির নীচে। বিলের তুলনামূলক উঁচু এলাকাতে ধান আবাদ করলেও তা তলিয়ে গেছে।’

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ তাদের পাশে আছে। পানি বৃদ্ধির প্রবণতা কমে গিয়ে অবস্থার উত্তরণ হবে বলে আমরা আশা করছি।’

আরিফুল ইসলাম/সাজেদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়