প্রতিপক্ষের হয়ে জমি দখল করে দেওয়ার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে 

স্থানীয় সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধে টাকার বিনিময়ে প্রতিপক্ষের হয়ে জমি দখল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাগেরহাটের শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (তদন্ত) বিরুদ্ধে। ঘুষ গ্রহণ, হুমকি-ধামকিসহ নানা অভিযোগের তথ‌্যপ্রমাণ হাজির করেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা পাননি বলেও দাবি করেছে স্থানীয় একটি পরিবার। তবে অভিযুক্ত ওসি তার বিরুদ্ধে অভিযোগকে বানোয়াট বলে মন্তব‌্য করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে ওসি মো. মফিজুর রহমান শেখের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শরণখোলা উপজেলার নলবুনিয়া দ্বীপচর এলাকার মো. ফজলুল হক সওদাগরের মেয়ে লিপি আক্তার। এসময় লিপির বড় বোন নাসিমা আক্তার ও বোন জামাই মুন্না উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লিপি আক্তার বলেন, ‘১৯৮৩ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ চৌধুরী ও তার ওয়ারেশদের কাছ থেকে চারটি দলিলে আমার পিতা ৬৬ শতক জমি কেনেন। এরপর থেকে আমরা এই জমি ভোগ দখল করি। কিন্তু হঠাৎ করে ২০২০ সালের প্রথম দিকে আব্দুর রশিদ চৌধুরীর ছেলে প্রবাসী রাজ্জাক চৌধুরীর স্ত্রী খাদিজা বেগম আমাদের জমি দখল করার চেষ্টা করেন।জমি দখলের অংশ হিসেবে দু একজন প্রতিবন্ধী এনেও খাদিজার বাড়িতে রাখেন। সকল নিয়ম-কানুন ও আইন উপেক্ষা করে শরণখোলা থানার ওসি (তদন্ত) মফিজুর রহমান শেখ খাদিজাকে জমি দখল করতে সহযোগিতা করেন। এর অংশ হিসেবে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে শরণখোলা থানার ওসি (তদন্ত) মো. মফিজুর রহমান শেখ ১৪৪ ধারা অমান্য করে খাদিজা বেগমকে প্রায় সাত কাঠা জমি দখল করে দিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল সাইদ আমাদের মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে বলেন। পরবর্তীতে খাদিজাকে দিয়ে দুটি ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়েছে আমাদের নামে।’

লিপি আক্তার আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় ওসি (তদন্ত) মফিজুর রহমান আমাদের কাছ থেকে নগদ ১৭ হাজার টাকা ঘুষ নেন। আদালত ও থানায় মামলা থাকার পরও ওসি মফিজুর রহমান খাদিজাকে জমি দখলে সহায়তা করে আসছেন। এসব বিষয়ে আমরা খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এরপরেও ওসি (তদন্ত) মফিজুর রহমান আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই। আমাদের বাবার দলিল অনুযায়ী তাদের জমি বুঝে পাওয়ার দাবি করছি।’

ফজলুল হক সওদাগরের বড় মেয়ে নাসিমা বেগম আরও বলেন, ‘ডিআইজি স্যারের কাছে আমাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্যার থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদকে ফোন করে আমাদের টাকা ফেরত দিতে বলেন। যার ফোন রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে। তারপরও আমরা কোন প্রতিকার পাইনি। ওসি তদন্ত মফিজুর রহমান শেখ আমাদেরকে প্রতি মাসে একটি হয়রানিমূলক মামলা দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন।’

এ অভিযোগের বিষয়ে ওসি (তদন্ত) মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ফজলুল হক সওদাগরের মেয়ে যেসব অভিযোগ করেছে, সেসব মিথ্যা ও বানোয়াট। খাদিজা বেগম ও ফজলুল হক সওদাগরের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এসব বিরোধে ফজলুল হক সওদাগরের পরিবার আমাকে নিয়ে মিথ্যে ও বানোয়াট অভিযোগ করছেন।’