ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বন্ধ ইলিশ শিকার, উপকূলে ফিরেছে লক্ষাধিক জেলে

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২০, ১৪ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ২০:৪৪, ১৪ অক্টোবর ২০২০
বন্ধ ইলিশ শিকার, উপকূলে ফিরেছে লক্ষাধিক জেলে

মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করার লক্ষ্যে বুধবার (১৪ অক্টোবর) থেকে টানা ২২ দিন সাগর, নদ-নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধ হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগেই তীরে ফিরেছেন কক্সবাজার উপকূলের লক্ষাধিক জেলে। 

তবে দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞায় কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। ট্রলার মালিকদের দাবি, ইলিশ ধরা বন্ধের এই সময়ে সাগরে বিদেশি মাছ ধরার ট্রলার অনুপ্রবেশ বন্ধে নৌ-বাহিনী ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হোক।

কক্সবাজার জেলা মৎস্য অধিদপ্তর কার্যালয় জানায়, নিষেধাজ্ঞার এই সময় ইলিশ শিকার, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ ও ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এই নিষেধাজ্ঞাকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জেলেপ্রতি ২০ কেজি করে সরকারি সহায়তার চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে কঠোর নজরদারি থাকবে প্রশাসনের।

কক্সবাজারের ২০ হাজার জেলেকে সরকারি খাদ্য সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। যাদের মাঝে জনপ্রতি ২০ কেজি করে মোট ৪০০ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হবে। 

কক্সবাজার জেলা ট্রলার মালিক সমিতি জানিয়েছে, জেলে অধ্যুষিত কক্সবাজার উপকূলে জেলেরা তাদের ট্রলার ও নৌকা নিয়ে নিরাপদ স্থানে ফিরেছেন। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে কেউ কেউ নৌকা ও ট্রলার মেরামতেরও উদ্যোগ নিচ্ছেন। তবে দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞায় কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় জেলেরা। সরকারের পক্ষ থেকে এই সময় খাদ্য সহায়তা দেওয়া হলেও তাও অনেকে পান না।

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল এলাকার জেলে রহিম বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময়ে ২০ কেজি করে চাল দিয়ে সংসার ঠিকমতো চলে না। দাদনের টাকা নিয়ে সংসার চালাতে হয়। সরকার জেলেদের জন্য বিকল্প কোনো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।’ 

একই এলাকার আরেক সিরাজ বলেন, ‘২০ বছর ধরে সাগরে মাছ শিকারের পেশা। কিন্তু আজ পর্যন্ত বন্ধের সময় কোন ধরনের সরকারি সহায়তা পেলাম না। জেলে কার্ড করতে গিয়ে কার্ডও করতে পারিনি জনপ্রতিনিধিদের জন্য। প্রকৃত জেলেরা জেলে কার্ড পায় না; জেলে কার্ড পায় মেম্বার-চেয়ারম্যানদের স্বজনরা। গরিবের দুঃখ কেউ বোঝে না।’

কক্সবাজার অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘হাতেগোনা কয়েকটি ট্রলার এখনো সাগরে রয়েছে। বাদ বাকি জেলার প্রায় ছয় হাজারের বেশি মাছ ধরার ট্রলার উপকূলে ফিরে এসেছে।’ 

কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান বলেন, ‘ইলিশের প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞার সময় জেলার ২০ হাজার জেলেকে ২০ কেজি সরকারি চাল সহায়তা দেওয়া হবে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে মৎস্য অধিদপ্তর, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানও চলছে।’

উল্লেখ্য, কক্সবাজারে নিবন্ধিত সাড়ে চার হাজার ট্রলার থাকলেও উপকূলে ফিরেছে ছয় হাজারের বেশি ট্রলার। আর এসব ট্রলারে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় লক্ষাধিক জেলে। কিন্তু নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার।

সুজাউদ্দিন রুবেল/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়