এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর
নওগাঁ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
নওগাঁ-৬ (রাণীনগর ও আত্রাই) আসনের উপনির্বাচনে ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী শেখ রেজাউল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন কেন্দ্রে বিএনপির সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ করেন।
আজ শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে আত্রাই উপজেলা সদরের নাহার গার্ডেন মার্কেটে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী বলেন, নির্বাচনের আগের দুই-তিন দিন ধরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে আওয়ামী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা। আজ (শনিবার) ভোটের দিন সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে চিহ্নিত বিএনপির সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দিয়েছেন তারা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১০৪টি ভোটকেন্দ্রের প্রত্যেকটি বুথে ধানের শীষের এজেন্ট দেওয়া হয়। ৯টায় ভোট শুরুর পরপরই আওয়ামীলীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা বিএনপির এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়। কোনো কোনো কেন্দ্র সাধারণ ভোটাররা ভোট দিতে বুথে প্রবেশ করলেও তাদের বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগের এজেন্টরা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে দিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করলেও তারা দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান তিনি।
ভোট বর্জন করবেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ রেজাউল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ভোটবর্জনের বিষয়ে তিনি পরে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মিথ্যাচার করা বিএনপির স্বভাব। ভোট সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু পরিবেশে সম্পন্ন হচ্ছে। বিএনপির প্রার্থী কোনো এজেন্টই দিতে পারেননি। তাদের এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।’
অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, ‘সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হচ্ছে। বড় ধরনের সহিংসতা কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বিএনপির প্রার্থী এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক কেন্দ্র বিএনপির কোনো এজেন্ট দেওয়া হয়নি।’
ভোটার উপস্থিতি কম
সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট শেষ হবে বিকেল ৫টায়। ভোট শুরুর পর বিভিন্ন কেন্দ্র সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়- অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রেই ভোটারদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
দুপুরে আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কিছুক্ষণ পর এক-দুইজন করে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৩৭৮ জন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৮০টি। যা মোট ভোটারের ১২ শতাংশের কিছু কম। ওই কেন্দ্রে ছয়টি বুথের কোনোটিতে বিএনপির এজেন্ট পাওয়া যায়নি।
প্রিসাইডিং অফিসার মোজাম্মেল হক জানান, তালিকা দিলেও বিএনপির কোনো এজেন্ট এখানে দায়িত্ব পালন করতে আসেননি। শুরু থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। কেন্দ্রের ভেতর কিংবা বাইরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
রাণীনগর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার শফিকুল ইসলাম, জুয়েল রানা, মোকাব্বেরসহ কয়েকজন জানান, তারা ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের ভেতর ঢুকতে চাইলে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা তাদের বাধা দেয়। ভোট না দিয়েই তারা ফিরে আসেন।
রাণীনগন ও আত্রাই উপজেলা নিয়ে গঠিত এই নির্বাচনী এলাকায় মোট ভোটার ৩ লাখ ৬ হাজার ৭২৫ জন। ১০৪টি কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী ছাড়াও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী ইন্তেখাব আলম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাজু/বকুল
আরো পড়ুন