হিলির সরকারি তালিকায় স্থান পায়নি অমিত মানীর মণ্ডপ
হিলি (দিনাজপুর) সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
হিলিতে এবার ২১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও স্থানীয় সরকারি অনুদান প্রাপ্তির তালিকায় রয়েছে ২০টি। কলেজ পড়ুয়া অমিত মানীর মণ্ডপটি সরকারি তালিকায় স্থান পায়নি।
৯ বছর বয়স থেকে প্রতিমা তৈরি করে আসছে হিলি সিপির এই তরুণ। বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজ উদ্যোগে প্রতিমা তৈরি করে আসছেন। কিন্তু উপজেলার সব পূজামণ্ডপে সরকারি অনুদান আসলেও বঞ্চিতই থাকে অমিত মানীর মণ্ডপ।
অমিতের বাবা অজয় মানীর হাইস্কুল শিক্ষক। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রত্ব কাল থেকেই প্রতিবছর অমিত প্রতিমা তৈরি করছে। বাবার সামান্য বেতনের টাকা দিয়ে এই প্রতিমা তৈরি করে সে। প্রতিটি উৎসবে প্রতিমা তৈরি করতে অমিতের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়ে যায়। বাবা অজয় মানীর কষ্ট হলেও ছেলের প্রতিভা দেখে অনেক অভাবের মাঝেও প্রতিমা তৈরির খরচ জোগাড় করেন তিনি।
প্রতি বছরই প্রতিমার জন্য প্রশংসা ও প্রতিশ্রুতি দুই মিলছে, কেবল অনুদানটুকুই মিলছে না। তার পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরি সকল কাজ শেষ করেছে অমিত। খড়, মাটি আর বাঁশ দিয়ে কাদার কাজ শেষ করে, রঙ-বেরঙের রং আর বিভিন্ন প্রতিমা তৈরির সরঞ্জাম দিয়ে সাজিয়েছে দুর্গাপূজার প্রতিমাগুলো।
অমিত মানীর বলেন, আমি ৯ বছর বয়স থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছি। ধমীয় উৎসব ছাড়াও আমি সব সময় ঠাকুর তৈরি করে থাকি। ছোট বেলায় বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ঘুরে বেড়াতাম আর কারিগরদের প্রতিমা তৈরি করা দেখতাম। ওইসব কারিগরদের কাজ দেখে প্রতিমা তৈরি করা শিখেছি। আমার ইচ্ছে আমি আরো বড় একজন দক্ষ প্রতিমা তৈরির কারিগর হবো।
বাবা অজয় মানীর বলেন, অমিত ছোট বেলা থেকে প্রতিমা তৈরি করে আসছে। যখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে, তখন থেকে কাদা-মাটি দিয়ে বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করতো। আমি তার প্রতিমা তৈরি করার সকল সরঞ্জাম এনে দিতাম। ধীরে ধীরে সে নিজেই সব পূজার প্রতিমা তৈরি করে ফেলে। তবে তার প্রতিমা তৈরি খরচ জোগাড় করতে আমি হিমশিম খাচ্ছি। অমিত যদি সরকারি অনুদান পেতো, তাহলে আমি উপকৃত হতাম।
হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী সমন মন্ডল জানান, অমিত প্রতিভাবান ছেলে। প্রতি বছরই আমি তার প্রতিমা দেখতে আসি। এ বছর আমি প্রথম পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি হয়েছি। তার মণ্ডপের জন্য তালিকায় নাম দিয়েছিলাম। হয়তো আমাদের ব্যর্থতার জন্য সে কোন অনুদান পায়নি। তবে আশা করছি আগামী বছর থেকে তার পূজা মণ্ডপের নাম তালিকায় আসবে।
মোসলেম/টিপু
আরো পড়ুন