ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পূজায় টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবসা মন্দা

আবু কাওছার আহমেদ, টাঙ্গাইল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৫, ২২ অক্টোবর ২০২০  
পূজায় টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবসা মন্দা

দুর্গাপূজায় টাঙ্গাইল শাড়ির বাজার মন্দা যাচ্ছে।করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় সাত মাস বন্ধ থাকার পর পূজা উপলক্ষে শাড়ির উৎপাদন ও বিক্রি শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা না থাকায় ব্যবসা ভালো হচ্ছে না।

জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের দুটি বেসিক সেন্টার রয়েছে। জেলার ঘাটাইল, মধুপুর, ধনবাড়ী, গোপালপুর, কালিহাতী ও ভূঞাপুর উপজেলার জন্য কালিহাতীর বল্লায় একটি সেন্টার আছে। দেলদুয়ার, বাসাইল, মির্জাপুর, নাগরপুর, সখীপুরসহ সদর উপজেলার জন্য রয়েছে বাজিতপুরে একটি বেসিক সেন্টার।

বাজিতপুর বেসিক সেন্টার সূত্র জানায়, এই সেন্টারের ৩২টি প্রাথমিক তাঁতি সমিতি ও তিনটি মাধ্যমিক সমিতির দুই হাজার ২৬৭ তাঁত মালিকের মোট ১২ হাজার ৪২৯টি তাঁত রয়েছে। তাঁতগুলোতে মিহি সুতার ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি হয়। পূজায় শাড়ির চাহিদা বাড়ায় তাঁতগুলো আবার চালু হয়েছে। 

সরেজমিন বাজিতপুর, কৃষ্ণপুর, দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল, কালিহাতী উপজেলার বল্লা এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, তাঁতের কারিগর ও শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। এনডি, ডেনু সিল্ক, জামদানির ওপর চুমকির কাজসহ বাহারি ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করছেন তারা।  

সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকার তাঁতের কারিগর মনজু মিয়া বলেন, করোনার কারণে সাত মাস বাড়িতে বসে ছিলাম। আয় না থাকায় খুব কষ্টে চলতে হয়েছে। পূজা উপলক্ষে কাজ আবার চালু হয়েছে। এখন তাও মোটামুটি চলা যাচ্ছে। 

কালিহাতীর বল্লা এলাকার তাঁত শ্রমিক শেফালি বেগম বলেন, এতদিন খুব কষ্টে দিন পার করেছি। তাঁত চালু হওয়ায় সুতা কাটার কাজ শুরু হয়েছে। কোনোরকম খেয়ে দিন পার করছি।

কালিহাতী উপজেলার বল্লা এলাকার তাঁত মালিক মো. হারুন বলেন, রোজার ঈদের আগে থেকে বিক্রি বন্ধ হওয়ায় অনেক শাড়ি আটক পড়েছিল। ব্যবসায় মূলধন যা ছিল বাড়িতে বসে থেকে খরচ করেছি। এদিকে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে কাপড়ের চাহিদা একটু বেড়েছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবার শাড়ি বিক্রি কম হচ্ছে। 

তাঁত মালিক হাসমত আলী বলেন, পূজায় টাঙ্গাইল শাড়ির বাজার খুবই মন্দা। তাঁত মালিক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, রোজার আগে থেকে শাড়ি গোডাউনে আটক পড়ে আছে। পূজা উপলক্ষে তাঁত চালু হলেও বিক্রি কম। 

তাঁত মালিক তোজাম্মেল হক বলেন, করোনার পাশাপাশি বন্যায় ব্যবসায় ধ্বস নেমেছিল। পূজা উপলক্ষে কিছু কিছু শাড়ি টানতে শুরু করলেও ব্যবসার মন্দা ছাড়েনি। করটিয়া হাটের ব্যবসায়ী আশিস বসাক বলেন, আগে একদিনে যা বিক্রি হতো এখন এক সপ্তাহে তার অর্ধেক বিক্রি হয় না। ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, দোকানে ও গোডাউনে পর্যান্ত পরিমাণ টাঙ্গাইল শাড়ি আছে। বিক্রি কম।

টাঙ্গাইল শাড়ি সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, তাঁতগুলো পূজা উপলক্ষে চালু হয়েছে। টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকার না আসায় দাম কম। অন্যান্য বছরের পূজার তুলনায় এবার ৭০ ভাগের কম শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। 

বাজিতপুর বেসিক সেন্টারের লিয়াজোঁ অফিসার  রবিউল ইসলাম বলেন, লকডাউন তুলে নেওয়ার পর থেকে তাঁতীরা কাজে ফিরে যান। চাহিদা না থাকায় উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ ছিল। পূজা উপলক্ষে টাঙ্গাইল শাড়ির চাহিদা বাড়তে শুরু করায় বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে। 

টাঙ্গাইল/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়