ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাগাতিপাড়া প্রধান সড়কে দুর্ভোগ চরমে

আরিফুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০০, ২৩ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ০৯:২৭, ২৩ অক্টোবর ২০২০
বাগাতিপাড়া প্রধান সড়কে দুর্ভোগ চরমে

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রের মালঞ্চি-বিহারকোল প্রধান সড়ক খানাখন্দে ভরে গেঠে। বর্ষা মৌসুমে ভাঙা রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সড়কটি মেরামতের কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনগণের মধ্যে দানা বেঁধেছে ক্ষোভ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই বছরআগে সড়কটি সংস্কার করা হলেও সুষ্ঠ পরিকল্পনার অভাবে ওই এলাকায় পরের বছরই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়।

তাছাড়া, পৌর এলাকার বিভিন্ন মহল্লার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের গর্তে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে অহরহ ঘটে দুর্ঘটনা। বৃষ্টির সময় দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

এদিকে, সড়কটি নিয়ে পৌরসভা ও এলজিইডি এই দুই দপ্তরের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়েছে। কোনো দপ্তরই এর দায় নিতে চান না।

জানা গেছে, বাগাতিপাড়া-নাটোর প্রধান সড়কের মালঞ্চি বাজার থেকে তমালতলা মহিলা কলেজ পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক প্রশ্বস্তকরণ ও সংস্কার কাজ ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে শেষ হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে সেসময় কাজটি করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৮ সালে সোনাপাতিল এলাকার একই স্থানে ভাঙা সড়কের গর্তে জনদুর্ভোগের কারণে স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করে এবং আটকে থাকা সড়কের পানিতে বড়শি ফেলে মাছ শিকারের প্রতীকী প্রতিবাদ করেন। ওই সময় আন্দোলনের পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছিল।

কিন্তু সড়কটির সংস্কারের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও একই এলাকায় সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও পিচ উঠে গেছে। কোথাও আবার ইট-সুরকি পর্যন্ত নেই। বর্ষা মওসুমে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় ওইসব গর্তে পড়ে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যানগাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন সাধারণ মানুষ।

সোনাপাতিল মহল্লার শিক্ষক রাশেদুল আলম জানান, বাগাতিপাড়া পৌরসভা থেকে এই এলাকার পানি নিষ্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে ওই এলাকার পানি রাস্তায় এসে জমে থাকায় সড়কটির ওই অংশ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এর কারণে সংস্কারের পরপরই আবারও ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে দীর্ঘদিন ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তিনি ড্রেনেজ ব্যবস্থার পাশাপাশি সড়কের ওই অংশে আরসিসি ঢালাইয়ের মত স্থায়ী ও টেকসই ব্যবস্থার দাবি জানান।

উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান জানান, সড়কটি মূলতঃ পৌরসভার অধীনে। পৌরসভার সেসময় আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় তাদের অনুমতি নিয়ে দুইবছর আগে প্রশ্বস্তকরণ ও সংস্কার কাজটি করা হয়েছিল। কিন্তু কোন রাস্তা সংস্কার বা নির্মাণের তিন বছর পূরণ হওয়ার পূর্বে নতুনভাবে সংস্কার করার প্রস্তাবনা দেওয়ার নিয়ম নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি মাসিক সভায় আলোচনা করেছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী আরও জানান, পৌরসভা থেকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সড়কে দুয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ করে সংস্কারের মাধ্যমে এর স্থায়ী সমাধান করা যায়।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন জানান, সড়কটি তার পৌরসভার অধীনের নয়, বরং এলজিইডির অধীনেরই। সেখানে পৌরসভা থেকে অর্থ ব্যয় করতে পারেন না। তবে জনদুর্ভোগের বিষয় নজরে আসায় তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি অবহিত করেছেন বলে জানান।

জানতে চাইলে ইউএনও প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল এ বিষয়ে জানান, সড়কটি কোন দপ্তরের বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। তবে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নাটোর/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়