ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক এখনও বেহাল, জনদুর্ভোগ

বাদশাহ্ সৈকত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ২৩ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১০:০৮, ২৩ অক্টোবর ২০২০
কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক এখনও বেহাল, জনদুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে কয়েক দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, সেতু ও কালভার্টগুলো বরাদ্দের অভাবে এখনও মেরামত করা হয়নি। ফলে ভোগান্তি কমছে না সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষদের। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিয়মিত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, সেতু ও কালভার্ট মেরামতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এবার দেড় মাসব‌্যাপী বন্যায় প্লাবিত হয় কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ৫৬ ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা। এতে এলজিইডিসহ অন্য সংস্থার ১৯১ কিলোমিটার পাকা সড়ক সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৩টি সেতু, ১৮১টি কালভার্ট, ১ হাজার ১৪৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ও ১৩৭ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

বন্যাদুর্গত কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা-পাকা সড়কগুলোতে দুর্ভোগ নিয়েই চলাচল করছেন স্থানীয়রা। পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়া সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন তারা।

পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজার এলাকায় কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর সড়কে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ বন্যার কারণে সময়মতো শেষ না হওয়ায় ব‌্যাপক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সংযোগ সড়ক দিয়েই এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ হাট যাত্রাপুরে যাতায়াত করছেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ সেতু নির্মাণের চুক্তির মেয়াদ গত মার্চে শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪০ ভাগ কাজ হয়েছে। বন্যার কারণে নির্মাণকাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা জিবি সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হবে।

শুলকুর বাজার এলাকার হাবিবুর রহমান মিন্টু বলেন, ‘বন্যায় অনেক সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। তার ওপর এ ব্রিজটি নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ না হওয়ায় যাত্রাপুর, পাঁচগাছী, বেগমগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। এ সড়ক দিয়েই কুড়িগ্রাম শহরে যাতায়াত করেন এসব এলাকার মানুষজন।’ 

ঠিকাদার গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সেতুর পিলারের কাজ প্রায় শেষের দিকে। বন্যার সময়ে কাজ করতে পারিনি। এখন পানি শুকিয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করা হবে।’

বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। গ্রামীণ এলাকার বেশিরভাগ সড়ক বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে তাদেরকে।

রৌমারী উপজেলার সুজাউল ইসলাম সুজা জানান, বন্যায় উপজেলার বেশিরভাগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামগুলোর সঙ্গে উপজেলা শহরের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। বন্যার পর প্রায় ৩ মাস পার হলেও এখনও রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়নি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল আজিজ জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের তালিকা করে অনেক আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এসব সড়ক মেরামতের জন্য বিশেষ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তাই নিয়মিত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্রের কার্যক্রম সম্পন্ন হলে দ্রুত কাজ করা হবে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে ২৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। টেন্ডার প্রক্রিয়াও শেষের পথে। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করার বিষয়ে মাসিক সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রত্যেক উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে। এ বরাদ্দ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ব‌্যয় করা হবে।

কুড়িগ্রাম/বাদশাহ্/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়