ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসছেন কে?

অদিত্য রাসেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩১, ২৪ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৩:০৫, ২৪ অক্টোবর ২০২০
রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসছেন কে?

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন আগামী ২৯ অক্টোবর। দীর্ঘ ৮ বছর পর রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে নেতাকর্মীদের মাঝে।

কাউন্সিলের মাধ্যমে দলে স্বচ্ছ ইমেজের নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছেন নেতাকর্মীরা। নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে নতুন কমিটি গঠিত হবে এমন আশা দলের সিনিয়র নেতাদের।

সম্মেলনকে ঘিরে রায়গঞ্জ উপজেলার মহাসড়ক-আঞ্চলিক সড়কে টানানো হয়েছে ব্যানার ও ফেস্টুন। তাতে শোভা পাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ জাতীয় চারনেতার ছবি।

সম্মেলনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে উপজেলার নিমগাছী ডিগ্রি কলেজ মাঠে। 

রাজনীতিতে একক আধিপত্য ধরে রাখা দলটিতে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে কিছু অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়েছে।  তবে তাদের বাদ দিয়ে বিভিন্ন কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  উপজেলা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনে সেই নির্দেশনা কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে উপজেলা জুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

সম্মেলন ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম টিপু জানান, সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান।  প্রধান বক্তা থাকবেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ও সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

এই সম্মেলনে কে হচ্ছেন সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক, এ প্রশ্নকে ঘিরেই সবার চোখ আগামী ২৯ অক্টোবরের দিকে।

রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৩ সালে।  সেইবার সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন আব্দুল হাদি আল-মাজী জিন্নাহ ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শরিফ উল আলম শরিফ।  এরপর দীর্ঘ সময় সম্মেলন না হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রম খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলছিলো।  জাতীয় দিবস, বিশেষ দিবস, দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও কেন্দ্রিয় কর্মসূচিগুলোও পালন করা হয়েছে দায়সারা ভাবে।  এছাড়া দীর্ঘদিন মূল দলের সম্মেলন না হওয়ায় অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রমও অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে।  তবে, এসব কারণে দলে বড় ধরনের কোন বিশৃংখলা দেখা না দিলেও এবারের সম্মেলনে নেতৃত্বের পরিবর্তন আসতে পারে বলে আভাস দিচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

এদিকে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তৃণমূলের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।  তবে কাউন্সিলদের চুড়ান্ত তালিকায় ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এবং অরাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশকারীরা স্থান পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এব্যাপারে উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক গাজী এসএম আজিমুদ্দিন ক্ষোভের সাথে জানান, বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে কাউন্সিলর বানানো হয়েছে।  এমনকি একই বাড়ি থেকেও ৫-৬ জনকে কাউন্সিলর বানানো হয়েছে।

একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ৩ বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আব্দুর রহিম মাষ্টার বলেন, বিএনপি-জামায়াতের লোকজনসহ অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাউন্সিলর বানানো হলেও আমাকে বাদ করা হয়েছে।

এবারের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন করে মোট ৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  তারা নির্বাচিত হতে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে রাত-দিন কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।  আর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন ওপর মহলে। 

স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের অভিমত, সভাপতি পদের জন্য নেতাকর্মীদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছেন সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের সাবেক এমপি মরহুম গাজী ইসহাক হোসেন তালুকদারের ছেলে জেলা আ’লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমন।  পিতার ক্লিন ইমেজকে কাজে লাগিয়ে জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তার প্রতি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে।  অনেকেই তাকে কর্মীবান্ধব বলেও অভিহিত করেছেন।  সম্ভবত তিনিই রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে আসীন হতে পারেন।

একই পদের অপরপ্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি আব্দুল হাদী আল মাজী জিন্নাহ।  তিনি জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হওয়ায় বিগত ৮ বছরে দলীয় কার্যক্রমে ও নেতাকর্মীদের জন্য প্রত্যাশিত সময় দিতে পারেননি। 

এদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদেও নতুন নেতৃত্ব আসা সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।  এ পদেও যোগ্য এবং ত্যাগী প্রার্থী হিসেবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে ভালো সাড়া পাচ্ছেন সাবেক ছাত্রনেতা, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা সম্প্রীতি মঞ্চের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং উপজেলা আ’লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হৃদয়।

সিরাজগঞ্জ/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়