সেই খবিরের ছয় মণ কয়েন কিনলেন ওষুধ ব্যবসায়ী
শাহীন আনোয়ার, মাগুরা || রাইজিংবিডি.কম
খাইরুল ইসলাম খবিরের ছয় মণ কয়েন কিনেছেন ঢাকার ওষুধ ব্যবসায়ী
মাগুরার সেই সবজি ব্যবসায়ী খাইরুল ইসলাম খবিরের (৪৫) প্রায় ছয় মণ ওজনের ৫৬ হাজার টাকার ধাতব মুদ্রা (কয়েন) কিনেছেন ঢাকার এক ওষুধ ব্যবসায়ী।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে খবিরের বাড়িতে গিয়ে ১ লাখ টাকায় কয়েনগুলো কেনেন ঢাকার ধানমন্ডির মিকা ফার্মা কেয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়ামুল করিম টিপু।
১৯ অক্টোবর জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ৬ মণ কয়েন নিয়ে বিপাকে খবির শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ব্যাপক সাড়া পড়ে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সোনালী ব্যাংকের মহম্মদপুর শাখা খবিরের কয়েন জমা নিয়ে তার অ্যাকাউন্টে প্রতিদিন দিন ১ হাজার টাকা জমা করতে শুরু করে। এভাবে ৪ হাজার টাকার কয়েন জমা দেন খবির। পরে ২২ অক্টোবর রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর খবিরের কয়েন নিচ্ছে ব্যাংক শিরোনামে আবারও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
খবির ১০ বছর ধরে ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা, ১ টাকা ও ২ টাকার প্রায় ৬ মণ ওজনের ৬০ হাজার টাকার ধাতব মুদ্রা জমান। এ কয়েন দিয়ে লেনদেন করতে না পারায় তিনি বিপাকে পড়েন। ৪ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার পরও খবিরের কাছে ৫৬ হাজার টাকার ধাতব মুদ্রা ছিল।
জনপ্রিয় নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডিতি প্রতিবেদন পড়ে বুধবার বিকেলে খবিরের বাড়িতে এসে ধাতব মুদ্রাগুলো কিনে নেন ঢাকার ওই ওষুধ ব্যবসায়ী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহম্মদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল এবং আমিনুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ ও মহম্মদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিপ্লব রেজা বিকো।
নিয়ামুল করিম টিপু জানান, রাইজিংবিডিতে প্রতিবেদন পড়ার পর খবিরের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে তিনি কয়েনগুলো প্রায় দিগুণ দামে কিনেছেন। নির্দিষ্ট পরিমাণ কয়েন মাটির ব্যাংকে ঢুকিয়ে দরিদ্র শিশুদের মধ্যে বিতরণ করবেন তিনি। এভাবে শিশুদের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন।
মহম্মদপুরের ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, ‘খবিরের কয়েন আমরা ব্যাংকে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। বিষয়টি ছিল সময়সাপেক্ষ ও ঝামেলাপূর্ণ। কয়েনের বিনিময়ে একসঙ্গে প্রায় দ্বিগুণ টাকা পাওয়ায় দরিদ্র ব্যবসায়ীর অনেক উপকার হলো।’
খাইরুল ইসলাম খবির বলেন, ‘৬ মণ খুচরো পয়সা নিয়ে আমার রাতের ঘুম হারাম হয়েছিল। আমার ব্যবসার সব পুঁজি চলে গিয়েছিল এসব কয়েনের মধ্যে। জীবনের প্রথম একসঙ্গে ১ লাখ টাকা হাতে পেলাম। আমার বিরাট উপকার হলো।’
শাহীন/রফিক
আরো পড়ুন