ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ভূগর্ভস্থ তারে আটকে গেছে সড়কের সংস্কার

মেহেরপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৪, ২৯ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১২:৩৪, ২৯ অক্টোবর ২০২০
ভূগর্ভস্থ তারে আটকে গেছে সড়কের সংস্কার

মেহেরপুর-কুষ্টিয়া মহাসড়কে গাংনী উপজেলার চোখতোলার মাঠ এলাকায় খানাখন্দের কারণে অহরহ দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে।

সংস্কার না হওয়ায় এই সড়কে আন্তঃজেলা, দূরপাল্লার বাস ও মালবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন শঙ্কা নিয়ে চলছে প্রতিদিন। চলতি বছরের প্রথমে এই এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারে টেন্ডার ও ওয়ার্ক অর্ডার হলেও সড়কের পাশে ভূগর্ভস্থ বিটিসিএলের তার থাকায় কাজ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

সড়কের এই অংশটুকু সংস্কার না হওয়ায় দিনদিন বেড়েই চলেছে জনদুর্ভোগ। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি ভুক্তভোগি পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছে। অন্যদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়ী করছে বিটিসিএলকে।

মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে চলাচলরত সিন্থিয়া পরিবহনের চালক আনারুল ইসলাম জানান, গাংনী উপজেলা জোড়পুকুর পার হয়ে চোখতোলা মাঠ এলাকার এক কিলোমিটার রাস্তার পিচ উঠে গেছে অনেক আগেই। কয়েক মাস ধরে বর্ষার কারণে ওই সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।  ফলে ওই এক কিলোমিটার রাস্তা ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিতে হচ্ছে প্রতিদিন। 

এই সড়কে চলাচলরত ট্রাকের চালক রবিউল হক জানান, গাংনীর চোখতোলা মাঠ এলাকার মাত্র এক কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তার কারণে যমুনা সেতু পার না হয়ে পদ্মার পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট পার হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলা সদরে সবজি ভর্তি ট্রাক নিয়ে যেতে হয়। 

গাংনী উপজেলার বামুন্দী বাজার এলাকার বাসিন্দা ডা. নূরুল হক জানান, প্রায় এক দশক পূর্বে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক সংস্কর হয়েছে।  কিন্তু দুর্ভাগ্য সড়ক সংস্কারের বছর খানেকের মধ্যে ওইস্থানের পিচ উঠতে থাকে এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মচারিদের মাঝেমধ্যে ছোট-খাট সংস্কার করতে দেখা যায়। এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তাটুকুর স্থায়ী সংস্কারের অভাবে প্রায়ই কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। 

মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে- চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি চোখতোলার মাঠ এলাকার এই রাস্তাটুকু সংস্কারের জন্য ৯ কোটি ৫২ লাখ ৭২ হাজার টাকার টেন্ডার হয় এবং বিধি মোতাবেক মেসার্স জহিরুল ইসলামকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী জহিরুল হক বলেন, কাজ শুরু করতে গিয়ে দেখি বিটিসিএলের ভূগর্ভস্ত তার রয়েছে।  ওই তার অপসারণ না করা হলে কাজ করতে বিঘ্ন হবে।  তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে জানিয়ে দিয়েছি।

মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হওয়ার কথা।  কিন্তু কাজ শুরু করার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানায়-  রাস্তার নিচে তার থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না।  আমরা বিটিসিএলকে তার সরিয়ে নিতে পত্র দিয়েছি।  এরপরও কোন কাজ হয়নি।  এছাড়াও দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বর্ষার কারণে কাজ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।  ওই প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী মে-২০২১ পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। 

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) মেহেরপুরের সহকারী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।  সড়ক ও জনপথ বিভাগ আমাদের ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় তার সরানো সম্ভব হচ্ছে না।  তবে আমি আবারও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে দেখবো কিভাবে তার সরানোর ব্যবস্থা করা যায়।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান বলেন, সড়ক সমস্যার সমাধান জরুরী। আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বিটিসিএল মেহেরপুরের সাথে কথা বলে দ্রুত সড়কের ওই অংশটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেবো।

মহাসিন আলী/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়