ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সাইডার ইন্টা. স্কুলে বেতন কমানোর দাবিতে হাইকোর্টে রিট

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০২, ১৬ নভেম্বর ২০২০  
সাইডার ইন্টা. স্কুলে বেতন কমানোর দাবিতে হাইকোর্টে রিট

চট্টগ্রাম মহানগরীতে অভিজাত শ্রেণির শিশুদের স্কুল হিসেবে পরিচিত ‘সাইডার ইন্টারন্যাশনার স্কুলে’ করোনার ছুটির সময় বেতন অর্ধেক কমানোর দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।  

আর স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, একটি মহল পরিকল্পিতভাবে স্কুলের সুনাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা করছে।  

চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ টেকনিক্যাল এলাকায় সুবিশাল ক্যাম্পাস নিয়ে ইংরেজি মাধ্যমের ‘সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’। সরকারি নির্দেশনায় ২৭ মার্চ থেকে স্কুলের ক্লাসরুমের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তবে শুরু থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস, পরীক্ষা ও অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রেখেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

করোনা পরিস্থিতির কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বেতন ৫০ শতাংশ কমিয়ে পুনর্নির্ধারণ করা, বেতন পরিশোধ করতে না পারা শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ দেওয়া, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের দাবি করছে স্কুলের নবগঠিত অভিভাবক ফোরাম।  

অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আফরোজা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, করোনার মধ্যেও স্কুল কর্তৃপক্ষ শতভাগ বেতন আদায় করছে। বেতন দিতে না পারলে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। বার বার আবেদনের পরও স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিভাবক ফোরামের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার আফরোজা আক্তার বাদী হয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ নভেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের বেঞ্চ শুনানি শেষে- শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে প্রবেশের জন্য কেন তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না; বেতন. টিউশন ফি কেন পুনর্নির্ধারণ করা হবে না এবং স্কুলে একটি নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি কেন গঠন করা হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। 

একইসঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে ক্লাসবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মাউশি পরিচালককে নির্দেশ দেন আদালত।    

স্কুলের প্রিন্সিপাল জ্ঞানেশ চন্দ্র ত্রিপাটি রাইজিংবিডিকে বলেন, এটি আন্তর্জাতিক মানের স্কুল। অনলাইনের মাধ্যমে শ্রেণিকার্যক্রম এবং পরীক্ষা চলমান রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অভিভাবক বেতন-ফি নিয়মিত পরিশোধ করছেন। কিন্তু বেতন দিতে না পারার জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাস থেকে বাইরে রাখা হয়নি। কোড নম্বরের মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীর জন্য অনলাইন ক্লাস উন্মুক্ত রয়েছে। 

প্রিন্সিপাল বলেন, কাউকেই ক্লাস বঞ্চিত করার অভিযোগ ভিত্তিহীন। যে সকল শিক্ষার্থীর বেতন বকেয়া রয়েছে, তাদের কিস্তিতে তা পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একেবারে বেতন ফি দিতে অক্ষম তাদের ব্যাপারে কেস টু কেস স্কুল কর্তৃপক্ষ করণীয় সব কিছুই করছে। 

জ্ঞানেশ চন্দ্র ত্রিপাটি বলেন, ‘করোনার মধ্যে শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সুবিধা দেওয়ার পরও অভিভাবকদের ছোট অংশ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে স্বনামধন্য এই স্কুল এবং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শিল্পপতি নাদের খানের সুনাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।’ 

অভিভাবক ফোরামের ৫০ শতাংশ বেতন কমানোর দাবি প্রসঙ্গে প্রিন্সিপাল বলেন, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এই স্কুলের বেতন কমানোর সুযোগ নেই। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কর্তৃপক্ষ স্কুলের দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন শতভাগ নিয়মিত পরিশোধ করে আসছে। 

হাইকোর্টে রিট মামলা এবং নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ ই-মেইলে পাওয়ার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাইকোর্টে তা উপস্থাপন করা হবে। এছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালকের কাছেও আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবো।’ 
 

রেজাউল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়