ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব‌্য

সাভার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪১, ১৭ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৯:৫৫, ১৭ নভেম্বর ২০২০
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব‌্য

দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমে গত ১৪ নভেম্বর প্রকাশিত 'জাল চেকে ব‌্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা হাওয়া, থানায় অভিযোগ' শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রাইম ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবাদলিপিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেছে, 'প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রাইম ব্যাংকের গণকবাড়ি শাখার সম্মানিত গ্রাহক মাহমুদা নাছরিনের ঘটনা অতিরঞ্জিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।'

প্রাইম ব‌্যাংকের দাবি, গ্রাহকের সঙ্গে ব‌্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ সত্য নয়। ১১-১০-২০২০ তারিখে গ্রাহক তার স্বামীসহ ব‌্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে ব্র‌্যাঞ্চ অপারেশন ম্যানেজারের কাছে ঘটনা জানালে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়। গ্রাহকের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ০৮.১০.২০২০ তারিখের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয়। তিনি ও তার স্বামী ভিডিও দেখে চেক বহনকারীকে তাদের ছেলে হিসেবে চিহ্নিত করেন। তারা জানান যে, তাদের ছেলে তার চেক বই নিয়ে পালিয়েছে। ব্র‌্যাঞ্চ ম্যানেজার তাকে চেকের ছবিও তুলে দেন। মাহমুদা নাছরিন ব্যাংকের সম্মানিত গ্রাহক। তার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের প্রশ্নই আসে না।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, 'গ্রাহকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের অডিট টিম পুরো ঘটনা তদন্ত করে। অডিট টিম গণকবাড়ি ব্র‌্যাঞ্চ ও গ্রাহকের বাসস্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করে। গ্রাহকের বাসস্থান এলাকার লোকজনের কাছ থেকে অডিট টিম জানতে পারে যে, ঘটনার পর থেকে গ্রাহকের ছেলে পলাতক আছে। অডিট টিমের তদন্ত সম্পন্ন হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। গ্রাহক তার চেক বই হারানোর ব্যাপারে ব‌্যাংককে অবহিত করেননি বা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ফোন করে জানাননি বা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেননি। শুধু গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে সত্যতা যাচাই না করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ব্যাংকের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য নেওয়া হয়নি। প্রমাণাদি ছাড়া অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সুনামহানির চেষ্টা করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই আমরা এই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ 

প্রতিবেদকের বক্তব‌্য:
প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত থানায় করা অভিযোগের কপি ও ভুক্তভোগী মাহমুদা নাছরিনে কাছ থেকে পাওয়া। প্রতিবেদনে গ্রাহকের স্বাক্ষরযুক্ত আসল চেকের ছবি ও সই জাল করা চেকের ছবি দেওয়া হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাহকের পক্ষে কেউ চেক বইয়ের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা তুললেও ব‌্যাংক থেকে গ্রাহককে ফোন করতে হয়। ২ লাখ বা তার বেশি টাকা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা নিতে হয়। কিন্তু ব‌্যাংক এসব নিয়ম মানেনি, যা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

মাহমুদা নাছরিনের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, প্রাইম ব‌্যাংকের গণকবাড়ি ব্র‌্যাঞ্চের অ‌্যাকাউন্টস অফিসার আনোয়ার হোসেন ভুক্তভোগীর সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন।

গ্রাহক তার চেক বই হারানোর ব্যাপারে ব‌্যাংককে অবহিত করেননি বলে প্রতিবাদলিপিতে দাবি করা হয়েছে। অথচ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রতিবাদলিপিতে জানিয়েছে, তারা গ্রাহককে সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়েছেন ১১ নভেম্বর। কর্তৃপক্ষ যদি অবহিত না হতেন তাহলে সিসিটিভি ফুটেজ কী কারণে দেখানো হলো?

প্রতিবেদন তৈরির সময় পুলিশ কর্মকর্তা ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক জসিম উদ্দিন। তা সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে প্রাইম ব্যাংকের অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ব্র‌্যাঞ্চ শাহতাব রিজভীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব‌্যাংকে গিয়ে সাক্ষাৎ করতে বলেন।

প্রমাণ ছাড়াই গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ঠিক নয়।
সংবাদে উল্লিখিত তথ্য-উপাত্তের মধ্যে অভিযোগের কপি, ভুক্তভোগীর বক্তব‌্যের ভিডিও, গ্রাহকের স্বাক্ষরযুক্ত আসল চেক, নকল চেকের ছবি প্রতিবেদকের কাছে আছে। পুরো সংবাদে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই।

তাই প্রাইম ব্যাংক কর্তৃপক্ষের আরও অভিযোগ থাকলে তার প্রকৃত জবাব ভুক্তভোগী গ্রাহক, পুলিশ কর্মকর্তা ও ব্যাংকের অভিযুক্ত (জিডিতে উল্লিখিত) কর্মকর্তা দিতে পারবেন বলে এ প্রতিবেদক মনে করেন।

সাব্বির/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়