অভিভাবকদের সতর্ক করে ৪ কিশোরের জামিন

কুষ্টিয়ায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলশিক্ষার্থীকে অপর কয়েকজন কিশোর মিলে মারধর করেছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যম ফেসবুকে সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার চার কিশোরকে জামিন দিয়েছেন আদালত। তবে তাদের অভিভাবকদের সতর্ক করে দিয়েছেন আদালত।

শনিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী জামিন শুনানীকালে আদালতে উপস্থিত চার কিশোরের বাবা-মা ও অভিভাবকদের সতর্ক হওয়ার শর্তে এই জামিনাদেশ দেন। 

কোর্ট জিআরও উপ-পুলিশ পরিদর্শক নকিব উদ্দিন এ তথ‌্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহষ্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরের পর থেকে মারধরের একটি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় পরদিন শুক্রবার (২০ নভেম্বর) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা কুষ্টিয়া শহরের খোদাদাদ খান সড়ক থানাপাড়ার বাসিন্দা শামসুর রহমান কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। 

দ:বি: ১৪৩/৩৪২/৩২৩/৫০৬ ধারায় অপরাধে এজাহারভুক্ত তিন কিশোর কুষ্টিয়া কলকাকলী, লরিয়েটস ইন্টারন‌্যাশনাল ও দিনমনি হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। আরেকজন এজাহারভুক্ত না।

কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌশুলী অ‌্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, সব সময় সবক্ষেত্রে আইন দিয়ে সবকিছু হয় না। কোমলমতি এসব বাচ্চাদের যতদিন পর্যন্ত নিজের ভালোমন্দের জীবনবোধ গড়ে না উঠবে, ততদিন পর্যন্ত এদের সব দায় অভিভাবকদের ওপর বর্তাবে।

কুষ্টিয়ায় শিশু অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বরত প্রবেশন অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে জেলায় সংঘটিত অন্তত: ৪০টি শিশু-কিশোর অপরাধের ঘটনায় জড়িত শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করছি। অপরাধ সংঘটনের পর শিশু সুরক্ষা আইনের বিধিমতে, অভিভাবকদের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগে প্রদত্ত নির্দেশিকার আলোকে তাদের আইনি সহায়তাসহ সব রকম নার্সিং করা হচ্ছে।’

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম জানান, গত বৃহষ্পতিবার শহরের হাউজিং এলাকার চাঁদাগাড়া মাঠে সংগঠিত কিশোর অপরাধের অভিযোগে করা মামলার এজাহারভুক্ত তিন কিশোরসহ চার কিশোরকে শুক্রবার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

শনিবার সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ তাদের জামিন দিয়েছেন। অভিভাবকদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, তাদের কিশোর বয়সী শিশুরা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে এবং মোবাইলে কী করছে বলে জানান ওসি আবুল কালাম।