ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পঞ্চগড়ে তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই মাঠ সরগরম

আবু নাঈম,পঞ্চগড় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ২৭ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ০৯:৫৩, ২৭ নভেম্বর ২০২০
পঞ্চগড়ে তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই মাঠ সরগরম

দেশের ৩৩০টি পৌরসভার মধ্যে ২৫টির মেয়াদ শেষ। এসব পৌরসভায় ভোটের জন‌্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে পৌরসভাগুলোর ভোট গ্রহণ হবে। পঞ্চগড়েও অনুষ্ঠিত হবে পৌর নির্বাচন।

যদিও নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করার আগে থেকেই পঞ্চগড়ে নির্বাচনী আমেজ চলছে। মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা রয়েছেন তৎপর। প্রচারণা-পাল্টা প্রচরণা, পোস্টারিং, গাড়ি বহরের শোডাউন আর সভা-সমাবেশ করছেন প্রতিনিয়ত। 

অনেকে করোনার শুরু থেকেই ভোটারদের কাছে গিয়ে সাহায্য-সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে মন জয় করার চেষ্টা করে আসছেন।
তবে নির্বাচনী মাঠে অনেক প্রার্থী তৎপর থাকলেও মূল লড়াইয়ে এক তৃতীয়াংশ প্রার্থীই থাকবে না বলে মনে করছে ভোটাররা। তাদের যুক্তি, ২০১৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনে দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাই মূল নির্বাচনের আগেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের দলের মধ্যে লড়াই করতে হবে। দল ঠিক করবে কাকে প্রতীক দেবে।

ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন তথা নৌকা প্রতীকের প্রত্যাশায় দৌড়ঝাঁপে রয়েছেন ছয় জন। তারা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু তোয়াবুর রহমান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া খাতুন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস. এম হুমায়ুন কবীর উজ্জল, জেলা স্বেচ্ছসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছার রহমান রেজা ও জেলা কৃষকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ।

তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। সভা-সমাবেশ, পোস্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ড টানিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। নানা প্রতিশ্রুতি দয়ে চলেছেন ভোটারদের।

এদিকে হাট-বাজারে বিভিন্ন দোকানে, চা-স্টলে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। ভোটারদের মাঝে বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। আগ্রহী প্রার্থীরা একদিকে যেমন বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। অন্যদিকে তেমনি দলীয় মনোনয়ন পেতেও তোড়জোড় করছেন। 

আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা ভোটের আগেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়াকে বেশি প্রধান্য দিয়ে আসছেন। তবে বিএনপিতে তেমন কোনো তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে না। দলীয় কোন্দল না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বিএনপিতে।

নৌকা প্রতীক কে পাচ্ছেন এ প্রশ্নের উত্তর পেতে কানাকানি আর গুজবের শেষ নেই দলীয় কর্মীদের মধ‌্যে। প্রচারণায় দুয়েকজন এগিয়ে থাকলেও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া খাতুনই দলীয় প্রতীক পাবেন বলে ধারণা ভোটারদের। গত নির্বাচনে দলীয় মননোয়নে ভোট করেছিলেন তিনি।

সম্ভাব্য প্রার্থী আরিফুল ইসলাম পল্লব বলেন, ‘প্রার্থী হিসেবে প্রচার শুরু করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে জয়ী হব। জয়ী হলে তরুণদের নিয়ে পঞ্চগড় পৌরসভাকে একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন, আলোকিত, মাদকমুক্ত ও মানবিক পৌরসভা গড়ে তুলব।’
একই সুরে কথা বলেন আরেক প্রার্থী হুমায়ুন কবীর উজ্জল। তিনিও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় সক্রিয় থাকবেন বলে জানান।

গতবারের দলীয় মনোনীত প্রার্থী জাকিয়া খাতুন বলেন, ‘গত নির্বাচনে পরাজিত হয়েও এখন পর্যন্ত আমি পৌরবাসীর পাশে রয়েছি। আমি নিশ্চিত এবারও দলীয় মনোনয়ন পাবো এবং এবার বিজয়ী হব।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, ‘কেদ্রীয় নির্দেশনা রয়েছে দলের মধ্যে কোন অভ্যন্তরীণ বিশৃংখলা সহ্য করা হবে না। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যদি কেউ প্রার্থী হয়, তাহলে তাকে দল থেকে অব্যহতি দেওয়া হবে।’
এদিকে পঞ্চগড় পৌরসভায় টানা পাঁচবারের নির্বাচিত মেয়র পৌর বিএনপির সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম। আসন্ন নির্বাচনেও তিনি মেয়র পদে লড়বেন। এখন পর্যন্ত বিএনপির অন্য কারও প্রচারণা না থাকায় তৌহিদুলই দলীয় মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত কে হন নৌকার মাঝি আর ভোটাররা কাকে করেন বিজয়ী।

পঞ্চগড়/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়