শায়েস্তাগঞ্জে নৌকা প্রতীক চান ৭ প্রার্থী
মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম
দেশের ২৫ পৌরসভায় আগামী ২৮ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের দিন রেখে গত ২২ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর থেকেই দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তবে প্রার্থী ‘বুঝেই’ ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন ভোটাররা।
প্রথম ধাপে দেশের অন্য জেলার মতো হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক পেতে আওয়ামী লীগের ৭ নেতা ‘নড়াচড়া’ শুরু করেছেন। বিএনপি থেকে একক প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র এমএফ আহমেদ অলির নাম শোনা যাচ্ছে। এ উপজেলায় জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র থেকেও নির্বাচনের মাঠে দুইজনের লড়াইয়ের কথা জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
নৌকার টিকিট পেতে গত কয়েক মাস ধরে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি বর্তমান মেয়র মো. ছালেক মিয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ-সভাপতি সাবেক উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান মাসুক, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ফজল উদ্দিন তালুকদার, আওয়ামী লীগ নেতা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সভাপতি আবুল কাশেম শিবলু, পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক পৌর প্যালেন মেয়র রাহেল মিয়া সরদার, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদউজ্জামান মাসুক, ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদুল ইসলাম শীতল।
এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সভায় মেয়র প্রার্থী হিসেবে ৬ নেতার নাম নির্বাচিত হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সভায় আসেননি প্রচারণায় অংশ নেওয়া পৌর প্যালেন মেয়র রাহেল মিয়া সরদার।
মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি বর্তমান মেয়র মো. ছালেক মিয়া বলেন, আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়ে ৫ বছর উন্নয়ন করেছি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। শতভাগ আশাবাদী দল আমাকে নৌকা প্রতীক দেবে।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ-সভাপতি সাবেক উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান মাসুক বলেন, জীবনের শুরু থেকে নৌকা প্রতীকের জন্য কাজ করছি। শতভাগ আশাবাদী নৌকা নিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করার। না পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদউজ্জামান মাসুক বলেন, দীর্ঘদিন কাউন্সিলর পদে থেকে তৃণমূলের জন্য কাজ করেছি। এবার মেয়র পদে নির্বাচন করতে নৌকা চাই। আশা করি দল আমাকে নৌকা প্রতীক দেবে।
উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ফজল উদ্দিন তালুকদার বলেন, আমি দলের জন্য নিঃস্বার্থভাবে করছি। তৃণমূল মানুষের পাশে আছি। আমার শতভাগ বিশ্বাস দল আমাকে নৌকা প্রতীক দেবে।
আওয়ামী লীগ নেতা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সভাপতি আবুল কাশেম শিবলু বলেন, আমি চাই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হতে। আমার বিশ্বাস দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। না পেলে পরবর্তী বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক পৌর প্যালেন মেয়র রাহেল মিয়া সরদার বলেন, দলের ত্যাগী নেতা হিসেবে শতভাগ আশাবাদী নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার। তবে নৌকা না পেলে তিনি নির্বাচন করবেন না। নৌকার প্রতীকের পক্ষে কাজ করবেন।
ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদুল ইসলাম শীতল বলেন, তরুণ ও যুবকরা আমাকে চায়। একইভাবে পৌরবাসী আমাকে মেয়র দেখতে চায় বলেই নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছি। নৌকা চাই, না পেলেও নির্বাচন করার কথা বলেন এ মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ভোটার জামাল আহমেদ দুলাল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই শহরের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা প্রতীকের পক্ষে আছি।
গাজীউর রহমান সাজু বলেন, ভোট এসেছে। ভোট চলে যাবে। আমদের সবাইকে মিলেমিশে থাকতে হবে। যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই।
শাহেনা আক্তার বলেন, নৌকা ছাড়া ভোট দিয়ে লাভ নেই। যিনি নৌকা নিয়ে আসবেন, তাকেই ভোট দেবো।
বিএনপি থেকে একক প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র এমএফ আহমেদ অলির নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি দুইবার পৌর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে শতভাগ জয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ প্রার্থী।
জাতীয় পার্টি থেকে আমেরিকা প্রবাসী রকিব আহমেদের মেয়র প্রার্থী হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন শিল্পপতি সারোয়ার আলম শাকিল। তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়ে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বর্তমানে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯টি। এর মধ্যে গত ২২ নভেম্বর ২৫ পৌরসভার নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৮ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ১ ডিসেম্বর। বাছাই ৩ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর।
হবিগঞ্জ/জেডআর
আরো পড়ুন