‘ইঁদুরের উপদ্রব না থাকলে আরও বেশি ধান পেতাম’
সাইফুল্লাহ হাসান || রাইজিংবিডি.কম
মৌলভীবাজারে এবার আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে
সময়মতো রোদ-বৃষ্টি হওয়ায় মৌলভীবাজারে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। হাকালুকি, কাউয়াদিঘি ও বাইক্কাবিল হাওরে অনেক অনাবাদি জমিতেও আমনের চাষ হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষক। তবে ইঁদুরের উপদ্রবে নাজেহাল হতে হয়েছে অনেককে।
সদর উপজেলার কাউয়াদিঘি হাওরপাড়ের বড়কাপন গ্রামের কৃষক জামাল খান বলেন, ‘ইঁদুরের উপদ্রব রয়েছে। যদি ইঁদুরের উপদ্রব না থাকতো তাহলে আমন ধানের ফলন আরও ভালো হতো। ১১-১২ বিঘা জমি চাষ করে ৪১-৪২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদেও ভালো লাভ হবে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে এক লাখ ১ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৮০২ টন।
রাজনগর উপজেলার কৃষক আজাদ মিয়া বলেন, ‘এবার ৮ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। এখন ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে হয়।’
কৃষকের সঙ্গে কথা বলছেন রাইজিংবিডির মৌলভীবাজারের প্রতিনিধি
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বালিয়াগ্রামের ফয়জুর রহমান ফজির বলেন, ‘৬ কিয়ার জমিতে আমান ধান আবাদ করেছি। কৃষি শ্রমিকের সংকট থাকায় ধান কাটতে দেরি হচ্ছে।’
সাগরনাল ইউনিয়নের উত্তর বড়ডহর গ্রামের কৃষক আহসান আলী চলতি মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। পোকা- মাকড়ের আক্রমণ ও রোগ বালাই কম হওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।
কমলগঞ্জ উপজেলার সবুর মিয়া বলেন, ‘বাজারে ধানের যে দাম রয়েছে সেই দাম অব্যাহত থাকলে আমাদের লাভ হবে। তবে করোনার কারণে শ্রমিকরা বাড়তি মজুরি দিতে হচ্ছে।’
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাউয়াদিঘি হাওরপাড়ের বড়কাপন গ্রামের ইটা সমাজকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রাজন আহমদ বলেন, ‘একসময় কাউয়াদিঘি হাওরের যেসব জমিতে আমন ধান চাষ করা যায়নি, এ বছর সেসব জমিতে ধান চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরাও খুশি।’
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী লুৎফুল বারী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে সময় লাগছে। আমরাও ধান কাটার মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করছি।’
মৌলভীবাজার/ইভা
আরো পড়ুন