ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘অসংখ্য লাশ পানিতে ভাসছিল’

মামুন চৌধুরী  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৩ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৫:১৬, ৩ ডিসেম্বর ২০২০
‘অসংখ্য লাশ পানিতে ভাসছিল’

৭১ এর ১৮ আগস্ট। জেলার বানিয়াচংয়ের মাকালকান্দি গ্রামে চন্ডি মন্দিরে চলছিলো পূজার প্রস্তুতি। কেউ সাজাচ্ছিলেন পূজোর থালা। অনেকেই ব্যস্ত ফুল সংগ্রহে।

এরই মাঝে ঝাপিয়ে পড়ে পাক বাহিনী। শুরু হয় গুলিবর্ষণ। ৪৪ নারীসহ ৭৮ জন নিরপরাধ হিন্দুকে নির্বিচারে হত্যা করে হায়েনার দল। তারা (পাক সেনারা) লাশগুলো পানিতে ফেলে দেয়। সেসময় অসংখ্য লাশ পানিতে ভাসছিলো।

সেই লাশের মিছিল স্বচক্ষে দেখেছেন মিনতী রাণী পাল। এমনকি মানুষরূপী পশুদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি মিনতীর শিশু বাচ্চাও। হত্যার পর শিশুটিকে ফেলে দেওয়া হয় নদীতে। ভয়াল সেই দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মিনতি।

একই ঘটনার স্বাক্ষী জয়তারা। আজও বেঁচে আছেন লোমহর্ষক ঘটনার স্মৃতি নিয়ে। জয়তারার তিন বছরের বাচ্চাকে টেনে নিয়ে বুটের নিচে পিষ্ট করে হত্যা করে হানাদারবাহিনী। গুলি করে হত্যা করা হয় তার মেয়ে, স্বামী ও ভাইকে। লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয় তাকেও। তবে তিনি বেঁচে যান ভাগ্যগুণে। ওই দৃশ্য মনে হলে এখনও ঘুমাতে পারেননি বলেও জানিয়েছেন জয়তারা।

নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া প্রাণনাথ দাস বলেন, ‘সবাই ব্যস্ত ছিলো পূজা নিয়ে। সকাল ৯টায় পাকিস্তানিরা আক্রমণ করে গ্রামে। পাখির মতো মারতে থাকে মানুষ। কেউ কেউ পালিয়ে গিয়ে ভাগ্যগুণে প্রাণে রক্ষা পায়। তবে সেদিন মেরে ফেলা হয়েছে ৭৮ জনকে।’

প্রাণনাথ দাস আরও  বলেন, ‘আমার চোখের সামনে বাবা বোন ফুফুসহ অনেককেই মরতে দেখেছি। কাতরাতে দেখেছি মৃত্যু যন্ত্রণায়। তখন নৌকা থেকে বেরিয়ে আসা রাজাকার ফজলুল হককে আমি পরিচয় দেই আমি মুসলমান। তখন তারা আমাকে ছেড়ে দেয়।’

মামুন/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়