ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রাজাখালী বস্তি এখন অপরাধের আখড়া 

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ৫ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৪:১০, ৫ ডিসেম্বর ২০২০
রাজাখালী বস্তি এখন অপরাধের আখড়া 

নদীর তীর দখল করে গড়ে উঠেছে রাজাখালী বস্তি

চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার চাক্তাই এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীর দখল করে গড়ে উঠেছে রাজাখালী বস্তি। এখানে এখন চলছে নানা অপরাধ। আধিপত‌্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হচ্ছে একের পর এক সংঘর্ষ। ঘটেছে খুনের ঘটনাও। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাক্তাই রাজাখালী এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীর দখল করে প্রায় এক হাজারের বেশি ঘর গড়ে উঠেছে। বাস্তুহারা সমিতি, ছিন্নমূল সমিতিসহ বিভিন্ন নাম দিয়ে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি নদীর তীর দখল করে বস্তি ঘর তৈরি করছেন। সেখান থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি এসব বস্তি ঘর তুলে ভাড়া দিয়েছেন বলে সেখানকার বাসিন্দারা জানান। এখানে একেক জনের নামে এক একটি কলোনি রয়েছে। কলোনির প্রতিটি বাসা ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়।

এই বস্তিতে গত ১৬ অক্টোবর আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে আবু তৈয়ব নামে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি ও ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এরপর বস্তির একাধিক কলোনির মালিক আকতার হোসেনসহ আট জনকে গ্রেপ্তার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর আকতারের নিয়ন্ত্রণাধীন কলোনি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে প্রতিপক্ষ। এ নিয়ে বস্তিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

বস্তির বাসিন্দা রিনা বেগম, লাকি আক্তারসহ আরও কয়েকজন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আকতারকে গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় মাসুম, আবুল হাশেম, আবু তাহের ফরিদ, লোকমানসহ আরও কয়েকজন মিলে তার কলোনি দখল নিতে প্রতিদিন বস্তিতে হানা দিচ্ছে। আকতারের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ভাড়া আদায় করছে। এদিকে আকতারের প্রতিপক্ষের দখল প্রচেষ্ঠায় আবারও এই বস্তিতে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’ তবে চেষ্টা করেও এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কোনো বক্তব‌্য পাওয়া যায়নি। 

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরেই বস্তিতে আবু তৈয়বকে খুন করা হয়। ঘটনার পর পরই পুলিশ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

নদীর তীর দখল করে অবৈধ বস্তি নির্মাণ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা নিয়ে আইনি জটিলতা থাকায় উচ্ছেদ শুরু করা যাচ্ছে না। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে কর্ণফুলীর তীর দখলকারীদের উচ্ছেদ করা হবে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে, সর্বশেষ ২ ডিসেম্বর কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রায় দুই একর জমি উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বন্দরের সহকারী ব্যবস্থাপক (সম্পত্তি) শিহাব উদ্দিন।

চট্টগ্রাম/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়