ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

শিশু গৃহপরিচারিকা নির্যাতন: যুগ্ম জেলা জজ ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৬, ৬ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৮:৪৯, ৬ ডিসেম্বর ২০২০
শিশু গৃহপরিচারিকা নির্যাতন: যুগ্ম জেলা জজ ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

কিশোরী আখি মনি

রংপুর নগরীর আদর্শপাড়ায় গৃহপরিচালিকা ১৪ বছরের কিশোরী আখি মনিকে নির্যাতনের ঘটনায় যুগ্ম জেলা জজ, তার স্ত্রীসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। 

শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালি থানায় ওই কিশোরীর মা শিরিনা বেগম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।  কোতয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) রাজিবুর রহমান মামলা দায়েরের তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার আসামিরা হলেন, নওগা জেলায় কর্মরত যুগ্ম জেলা জজ রেজাউল বারী, তার দন্ত চিকিৎসক স্ত্রী কানিজ কান্তা, কানিজ কান্তার মা খালেদা বেগম ও বোন শাপলা বেগম। নির্যাতিত শিশুটি বর্তমানে কোতয়ালি থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে। 

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের মৃত বাছেদ আলী ফকিরের মেয়ে আখি মনি। আখি মনির মা শিরিনা বেগম জানান, প্রতিবেশী ডালিম চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে তার মেয়ে গত দুই বছর ধরে রংপুর নগরীর আদর্শপাড়া মহল্লার যুগ্ম দায়রা জজ রেজাউল বারীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ নভেম্বর ডালিম চন্দ্র রায় শিরিনা বেগমকে নিয়ে রংপুরের রেজাউল বারীর বাসায় যান। সেখানে গেলে শিরিনা বেগমকে জানানো হয়, তার মেয়ে টাকা চুরি করেছে। তাই তারা তাকে আর বাসায় রাখবে না। এ সময় আখি মনি মাকে বলে, সে টাকা চুরি করেনি। তবুও বাড়ির লোকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন ও গোপনাঙ্গে গরম ছ্যাকা দিয়েছেন। এ অবস্থায় কান্তা বেগম ও রেজাউল বারী ৩০০ টাকার সাদা স্ট্যাম্পে শিরিনা বেগমের স্বাক্ষর নিয়ে মেয়েকে মার হাতে তুলে দেয়।  

এরপর মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন শিরিনা বেগম। আসার পর মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে দেখে গ্রামবাসীকে ডেকে বিস্তারিত জানান।  বিষয়টি জানার পর গ্রামবাসী জরুরিসেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানায়। এরপর কিশোরগঞ্জ থানার পুলিশ এসে শিশুটিকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।  

সোমবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে গুরুতর অসুস্থ আখি মনিকে নিয়ে তার মা শিরিনা বেগম রংপুর মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করার জন্য গেলে তাকে ভর্তি করা হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি মেয়েকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসেন।

পুরো ঘটনা জানিয়ে শিরিনা বেগম কিশোরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে থানা থেকে নারী কনস্টেবলের সহায়তায় তাদের শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) রংপুর কোতয়ালি থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কোতয়ালি থানার পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে মামলা রেকর্ড করে। 

কোতয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) রাজিবুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’
 

নজরুল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়