ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রাতজাগা চালকদের জন্য চা হাতে পুলিশের অপেক্ষা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৯, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১২:৪০, ২০ ডিসেম্বর ২০২০
রাতজাগা চালকদের জন্য চা হাতে পুলিশের অপেক্ষা 

দূরপাল্লার নাইট কোচ, পণ্যবাহী ট্রাকসহ গভীর রাতে চলাচলকারী গাড়ির চালকেরা ভোরের দিকে ঝিমিয়ে পড়েন। রাতে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা এ কারণেই হয়। তাই চালকদের চাঙ্গা রাখতে অভিনব ভালোবাসা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের একদল সদস্য। চা, বিস্কুট আর গরম পানি নিয়ে তারা রাত জাগা চালকদের অপেক্ষায় থাকেন।

চট্টগ্রাম জেলার রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শামিম আনোয়ারের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা সড়কে গভীর রাতে গাড়ি চালকদের গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করেছেন। একই সঙ্গে চা-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করে দুর্ঘটনামুক্ত সড়ক নিশ্চিত করার কার্যক্রম শুরু করেছেন।

ঢাকা থেকে রাঙামাটিতে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক চালক আবদুল্লাহ মাসুদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘রাতভর একটানা গাড়ি চালাতে গিয়ে চোখে ঝিমুনি চলে আসে। এটা অস্বীকার করার উপাই নেই। এ ধরনের ঝিমুনি থেকেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মহাসড়কে পুলিশ সাধারণত কাগজপত্র পরীক্ষা ও মালামাল চেক করার জন্য গাড়ি দাঁড় করায়। কিন্তু চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে পুলিশ সদস্যরা ভালোবাসা নিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। পুলিশের সিগন্যালে গাড়ি থামালে দেখা যায়, গরম পানির জার নিয়ে পুলিশ সদস্য এগিয়ে আসছেন মুখ ধোয়ানোর জন্য। পরে চা-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়নও করানো হচ্ছে। পুলিশের এমন ভালোবাসা অচিন্তনীয়।’

রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও ভ্রাম্যমাণ ট্রাফিক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শামিম আনোয়ার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘রাত জেগে গাড়ি চালানো চালকদের জন্য আমরা কিছু রিফ্রেশমেন্ট পয়েন্ট চালু করেছি। পয়েন্টগুলো চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক এবং চট্টগ্রাম-রাঙামাটি আঞ্চলিক মহাসড়কে। এসব পয়েন্টে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানো থেকে চালকদের নিরুৎসাহিত করতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাত্রিকালীন সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে চালকদের ঘুমঘুম চোখে গাড়ি চালানোটাই বেরিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে চালকদের সচেতন করতে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অল্প কিছুক্ষণের জন্য গাড়ি থামিয়ে কথা বলছে পুলিশ। চালক ও হেলপারদের এই শীতে মুখ ধোয়ার জন্য গরম পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ওয়ান টাইম কাপে চা এবং বিস্কুটের আয়োজন করেছে পুলিশ।’ 

সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, ‘এ কাজে খরচ খুব সামান‌্য। কিন্তু এতে যে ভালোবাসার বন্ধন তৈরি হচ্ছে তা মহামূল্যবান, খুবই মজবুত। প্রতিদিন গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানের আঞ্চলিক মহাসড়কে চালকদের আন্তরিকতার মধ‌্য দিয়ে সচেতন করা হচ্ছে। এ কার্যক্রম অব‌্যাহত থাকবে।’

রেজাউল করিম/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়