ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জে এম সেন ভবন জাদুঘর বানাতে হবে : রানা দাশগুপ্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫২, ৯ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৯:০৮, ৯ জানুয়ারি ২০২১
জে এম সেন ভবন জাদুঘর বানাতে হবে : রানা দাশগুপ্ত

জে এম সেন ভবনটি বিপ্লবী স্মৃতি জাদুঘর করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। 

শনিবার (৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জে এম সেন ভবন ভাঙার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান। 

অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘ব্যক্তি স্বার্থে নয়, রাষ্ট্র ও সরকারের দৃষ্টিতে আনার জন্য ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ জে এম সেন ভবন বিকৃতি, বিনাশ ও অপসারণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি। যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ও নেলী সেনগুপ্তর সম্পত্তি নিয়ে যে সব দলিল তৈরি হয়েছে, সেগুলো দেশের কৃষ্টি-ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে বাতিল ঘোষণা করতে হবে। ঐতিহাসিক ভবনটি আগের রূপে ফিরিয়ে দিয়ে বিপ্লবী স্মৃতি জাদুঘর বানাতে হবে।’ 

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি বলেন, এই ভবন শুধু সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতা যাত্রামোহন সেনগুপ্তের বাড়ি নয়, এখানে মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ চন্দ্র বসু, শরৎ বসু, মোহাম্মদ আলী ও শওকত আলীসহ বিভিন্ন শীর্ষ নেতাদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। বাড়িটি প্রগতিশীল আন্দোলনের সূতিকাগার। এটি দখলের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি প্রকৌশলী পরিমল কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক শ্যামল কুমার পালিতের পরিচালনায় বক্তব্য দেন মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, ডা. মাহফুজুর রহমান, ইন্দুনন্দন দত্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুছ, সফর আলী, ড. জিনবোধী ভিক্ষু, তপন চক্রবর্তী, খোরশেদ আলম, শৈবাল দাশ সুমন প্রমুখ। 

মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সড়ক হয়ে চেরাগী পাহাড় প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা যোগ দেয়।

শতবর্ষের বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী চট্টগ্রামের জে এম সেন ভবন। লাল ইটের তৈরি টিনের ছাউনি দেওয়া এ ভবনে সংবর্ধিত হয়েছিলেন চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের ঘটনায় আটক ও পরে মুক্তি পাওয়া বিপ্লবীরা। 

এ ভবন থেকে শুরু হয় চট্টগ্রামের অসহযোগ আন্দোলন। আন্দোলনে যোগ দেওয়া চা-শ্রমিকদের ওপর ব্রিটিশ পুলিশ গুলি চালালে সংহতি জানানো রেল শ্রমিকরা এ ভবন ও আশপাশের এলাকায় তাঁবু টানিয়ে ধর্মঘট চালিয়ে যান। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ ইতিহাসের নানা বাঁকবদলের সাক্ষী চট্টগ্রামের প্রথম টাউন হল খ্যাত যাত্রা মোহন সেন (জে এম সেন) ভবন। যাত্রা মোহন সেনগুপ্তের হাত ধরেই চট্টগ্রামে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন বেগবান হয়।

১৯১৬ সালের ১৯ নভেম্বর ভবনের নির্মাণ শুরু হয়। ১৯১৯ সালের ২ ডিসেম্বর যাত্রা মোহন সেনগুপ্ত মারা যান। পরের বছর ৮ ফেব্রুয়ারি ভবনের উদ্বোধন করা হয়। এরপর বাবার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কংগ্রেস নেতা দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত হলটির নতুন নাম রাখেন ‘যাত্রা মোহন সেন হল’, পরে যা ‘জে এম সেন ভবন’ নামে পরিচিতি পায়। 

রেজাউল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়