ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ফেনী হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে তিনগুণ

ফেনী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১০, ১১ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ২০:৫০, ১১ জানুয়ারি ২০২১
ফেনী হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে তিনগুণ

মায়ের কোলে শিশু সন্তান, বাবার হাতে ঝুলছে স্যালাইন-ইনজেকশন। শুধু একজন নয়, এমন অনেক রোগীই দেখা যাচ্ছে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। এ ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ‌্যা প্রায় তিন গুণ বেড়ে গেছে। বেড বা মেঝেতে স্থান না মেলায় এভাবে মা-বাবার কোলে চড়েই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের। 

সোমবার (১১ জানুয়ারি) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। তার আগে গত ৪/৫ দিন ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেনীতে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এতে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সে কারণে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনালের হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আসন সংখ্যা ২০। সোমবার সেই সংখ‌্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়ে গেছে।

কর্তব্যরত নার্স খালেদা আক্তার জানান, প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী বাড়ছে। বেশির ভাগই শিশু। ওয়ার্ডে স্থান সংকুলন না হওয়ায় মেঝে, বারান্দা ও বাওয়ার্ডের বাইরে টেবিলে রেখে ডায়রিয়া রোগীদের স্যালাইন দিতে হচ্ছে। এদের মধ‌্যে অনেকেই রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত।

ফেনী জেনালের হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন ভূঞাঁ বলেন, ‘২০২০ সালের নভেম্বরে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ২১ জন শিশু ভর্তি ছিল। ডিসেম্বরে সে সংখ‌্যা ৫০ পার হয়েছে। সোমবার (১১ জানুয়ারি) সে সংখ‌্যা ৬০ পেরিয়ে ৭০ এর কাছাকাছি। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মাত্র ২০টি শয্যা। বর্তমানে শয‌্যা সংখ‌্যার চেয়ে তিনগুণ বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।’ 

নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক নবজাতক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শিশুদের ডায়রিয়া। একটা সাধারণ ধারণা আছে, শুধু রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া হয়। এ ধারণা ভুল। রোটা ভাইরাস ছাড়াও অন্যান্য জীবাণুতেও ডায়রিয়া হতে পারে। তাই রোটা ভ্যাকসিন সবসময় কার্যকর হবে এমন কথা নেই।’

ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের হোসনা আক্তার (৩৫) বলেন, ‘মেয়ে সুমাইয়াকে (১) নিয়ে হাসপাতালে আছি। মেয়েটি বমি ও পাতলা পায়খানা করছে। হাসপাতালে একদিন রাখার পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।’

ফুলগাজীর জগতপুর থেকে ছয় মাস বয়সি মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন খোদেজা বেগম। তিনি বলেন, ‘গত চার-পাঁচদিন ধরে মেয়ের বমি আর পাতলা পায়খানা হচ্ছে। গ্রাম্যচিকিৎসক দেখিয়েছি। অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখন উন্নতি হচ্ছে।’

এদিকে বেড না পেয়ে ওয়ার্ডের সামনে খোলা যায়গায় অবস্থান নিয়েছেন অনেকে। সেখানেই শিশু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত ডায়রিয়ার কোনো রোগীর মৃত‌্যু হয়নি। 

এসব বিষয় জানিয়ে হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন ভূঞাঁ বলেন, ‘আমাদের এখানে শয্যার সংখ্যা কম থাকলেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে। কষ্ট হলেও সব রোগীই ভালো চিকিৎসা পাবে।’

সৌরভ পাটোয়ারি/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়