ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পাটগ্রামের বাঁশকাটা ছিটমহল ঘুরে গেলেন এলজিইডি মন্ত্রী

লালমনিরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৭, ১৫ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১০:০৯, ১৫ জানুয়ারি ২০২১
পাটগ্রামের বাঁশকাটা ছিটমহল ঘুরে গেলেন এলজিইডি মন্ত্রী

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাঁশকাটা ছিটমহল পরিদর্শন করলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। 

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর জীবন জীবিকা বদলে যেতে শুরু করেছে। সুবিধাবঞ্চিত ছিটমহলবাসী অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে সরাসরি অংশ নিচ্ছেন, ফলে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

এ প্রকল্প ছাড়াও এলজিইডি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রাইমারি অ্যাডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-৪ এর আওতায় বিলুপ্ত ছিটমহলে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হচ্ছে। এলজিইডির এসব কর্মকাণ্ড বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

প্রকল্পের সার্বিক কর্মকান্ডে ভাগ্যহত ছিটমহলবাসীর জীবন-জীবিকার ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি ছিটমহল পরিদর্শনে আগ্রহ প্রকাশ করেন। 

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে ছিটমহল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতের অভ্যন্তরে এবং ভারতের ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে যায়। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ছিটমহল বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহলগুলো বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত এবং ভারতের অন্তর্গত বাংলাদেশের ছিটমহল গুলো ভারতীয় সীমানাভুক্ত হয়।

তিনি জানান, দীর্ঘ ৪৯ বছর ছিটমহলের অধিবাসীরা বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত ছিল।  ছিটমহলবাসীর নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিলিপ্ত ছিটমহলের অবকাঠামোর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এলজিইডি প্রকল্পটি প্রণয়ন করে। যা ৫ জানুয়ারি ২০১৬ এ একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। ছিটমহল জেলাগুলো হচ্ছে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী।

তিনি জানান, ছিটমহলে সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট ও সামাজিক অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে।  এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ২৫৮.১৭ কিলোমিটার সড়ক, ৬৩৯.১৩ মিটার ব্রিজ ও কালভার্ট, ৬টি কমিউনিটি সেন্টার, ২৪টি মসজিদ, ৯টি মন্দির, ৫টি গ্রামীণ হাটবাজার, ৪টি শ্মশান ঘাট, ৪টি কবরস্থান, ৬টি ঘাট নির্মাণ এবং ৩.০৫ কিলোমিটার খাল খনন। এসকল অবকাঠামোর মধ্যে ২১১.৮০ কিলোমিটার সড়ক, ৬৩৯.১৩ মিটার ব্রিজ ও কালভার্ট, ৬টি কমিউনিটি সেন্টার, ৫টি মন্দির, ২০টি মসজিদ নির্মাণ, ২টি গ্রামীণ হাটবাজার, ৪টি শ্মশান ঘাট, ৪টি কবরস্থান, ৬টি ঘাট নির্মাণ, ৩.০৫ কিলোমিটার খাল খনন কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। 

এ সময় লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ খান, জনস্বাস্থ্যের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান, লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল উপস্থিত ছিলেন।

এলজিইডি মন্ত্রী নির্মিত বাঁশ কাটা কমিউনিটি সেন্টারে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর সঙ্গেও সরাসরি মতবিনিময় করেন। ছিটমহলবাসীর পক্ষে নজরুল ইসলাম ওই মতবিনিময় সভায় তাদের আমূল বদলে যাওয়া জীবনচিত্র তুলে ধরেন এবং তাদের মত ভাগ্যাহত মানুষের জন্য সরকারের অবদানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এলজিইডি মন্ত্রী ভবিষ্যতে এসব ছিটমহলবাসীর সঙ্গে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন।

ফারুক/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়