ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রাজশাহীর দুই পৌরসভায় আ.লীগ, একটিতে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বিজয়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০০:৫৯, ১৭ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ০২:০৭, ১৭ জানুয়ারি ২০২১
রাজশাহীর দুই পৌরসভায় আ.লীগ, একটিতে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বিজয়ী

পৌরসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজশাহীর তিনটি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে দুটি পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। আর একটিতে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী।

রাজশাহীর যে তিনটি পৌরসভায় নির্বাচন হয়েছে সেগুলো হলো- বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ, গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট এবং বাঘার আড়ানী। এর মধ্যে ভবানীগঞ্জে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে ব্যালট পেপারে। অন্য দুটিতে নির্বাচন হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।

আড়ানী পৌরসভায় নির্বাচিত হয়েছেন মুক্তার আলী। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। তিনি আড়ানী পৌরসভার বর্তমান মেয়রও। এবারও নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় তাকে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পৌরসভায় মেয়র হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী একেএম আতাউর রহমান খান। বাগমারার ভবানীগঞ্জে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী আবদুল মালেক মণ্ডল। তিনি পৌরসভার বর্তমান মেয়রও। আর আতাউর রহমান খান গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আড়ানী পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহিন রেজা শনিবার রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুক্তার আলী নারিকেল গাছ প্রতীকে ৫ হাজার ৯০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী শহিদুজ্জামান শাহিদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৩০০ ভোট। আর বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তোজাম্মেল হক ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ২৭৬ ভোট। এছাড়া রুবন হোসেন বাপ্পী নামের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল ফোন প্রতীকে পেয়েছেন ৬৯ ভোট। অবশ্য পৌর ছাত্রলীগের নেতা বাপ্পী আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। আড়ানীতে মোট ভোটার ছিলেন ১৩ হাজার ৯৮৪ জন। ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়।

এদিকে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, কাঁকনহাটে বিজয়ী নৌকার প্রার্থী একেএম আতাউর রহমান খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৫৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ১২৮ ভোট। অপর প্রার্থী জাতীয় পার্টি মনোনীত মোল্লা রুবন হোসেন লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৮৪ ভোট। কাঁকনহাটে মোট ভোটার ছিলেন ১৩ হাজার ২৩৫ জন। ভোটকেন্দ্র ছিল ১১টি।

বাগমারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ভবানীগঞ্জে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুল মালেক মণ্ডল পেয়েছেন ৭ হাজার ৩১৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মামুনুর রশীদ মামুন জগ প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৭৫৭ ভোট। স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী কামাল হোসেন নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭ ভোট। এখানে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক পেয়েছেন ১ হাজার ৮২ ভোট। ভবানীগঞ্জে মোট ভোটার ছিলেন ১৪ হাজার ৪০৫ জন। ভোটকেন্দ্র ছিল ৯টি।

এর আগে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোটকেন্দ্রে সব সময়ই ছিল ভোটারদের দীর্ঘ সারি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভবানীগঞ্জের বিএনপি প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তার অভিযোগ, শহীদ সেকেন্দার মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিনি নিজের ভোট দিতে গেলে নৌকার সমর্থকরা তাকে লাঞ্ছিত করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি নিজের ভোট দিতে পারেননি। এছাড়া কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদেরও বের করে দেয়া হয়েছে।

এর বাইরে ভোটগ্রহণকালে কোথাও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অন্য দুটি পৌরসভায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ভোট বর্জন করলেও ভবানীগঞ্জেও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। কাঁকনহাটেও ভোটারদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।

আড়ানী পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কয়েকদিন ধরেই সংঘর্ষ ঘটেছে। তবে ভোটের দিন পরিস্থিতি ছিল শান্ত। বেলা ১১টার দিকে আড়ানীর মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম। তিনি নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তানজিমুল/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়