ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

‘কোনোদিন ভাবিনি পাকা ঘরে বাস করবো’

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৪, ১৯ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৮:০০, ১৯ জানুয়ারি ২০২১
‘কোনোদিন ভাবিনি পাকা ঘরে বাস করবো’

‘কোনদিন ভাবিনি পাকা ঘরে বসবাস করবো। প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে ঘর দিল এতে আমি খুব খুশি। দুই রুমের এই ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারবো। ’ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে বাগেরহাটে ঘর পাওয়া ভূমিহীন দীন মোহাম্মদ।

তিনি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী ইউনিয়নে এই ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন।  তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি আসলে এখন আর পলিথিন ঠিক করতে হবে না। না ঘুমিয়ে এক জায়গায় বসে থাকতে হবে না।’

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বাগেরহাটে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ৪৩৩টি ঘর। এরই মধ্যে ৩১৫টি ঘরের নির্মাণ শেষ হয়েছে। বাকি ১১৮টির ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। 

২ শতাংশ জমির উপর নির্মিত প্রতিটি ঘরে থাকছে দুটি কক্ষ একটি রান্নার জায়গা ও একটি টয়লেট। নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। টিনসেডের সেমি পাকা ঘরে একটি পরিবার স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করতে পারবেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের আঠারো বেকি নদীর পাশে এক সারিতে নির্মাণ করা হয়েছে ৩৫টি ঘর। লাল টিনসেডে অন্যরকম এক ধরনের সৌন্দর্য্য ফুটে উঠেছে। সুপেয় পানির ব্যবস্থার জন্য বসানো হয়েছে দুটি গভীর নলকুপ। বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া শিশুদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে খেলার মাঠ। তারপাশেই থাকবে প্রশস্ত রাস্তা। নদীর পাশে লাগানো হবে গাছ, সবুজ বেষ্টনীতে বাস করবেন প্রতিটি পরিবার। 

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরেই যাদের নামে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসন তাদের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করবেন।

ঘর বরাদ্দ পাওয়া বিধবা হালিমা বেগম বলেন, ‘কোন জমি-জমা ছিল না। স্বামীর মৃত্যুর পরে দুই সন্তানসহ স্বামী পরিত্যক্তা মেয়েকে নিয়ে রাস্তার পাশে, বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে থাকতাম। আজ এ জায়গায়, কাল অন্য জায়গায় থাকতাম। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে এই ঘর পেয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ুন শেখ বলেন, ‘আমার এলাকায় যে আশ্রয়ন প্রকল্প হয়েছে তাতে আমরা খুব খুশি। বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ পাকা ঘর পেয়ে এলাকার ভূমিহীনরাও খুব খুশি। এই ঘরে তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন।’

মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শিকদার উজির আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।  কিন্তু এলাকায় আরও অনেক ভূমিহীন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মহোদয় যদি আরও কিছু ঘর বরাদ্দ দিতেন তাহলে অন্য ভূমিহীনদেরও দিতে পারতাম।’

মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মাফফারা তাসনীন বলেন, ‘ঘরগুলোকে আমরা খুবই যত্নের সাথে তৈরি করেছি। এই ঘরগুলো মডেল ঘর হয়েছে। আমরা সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করেছি, যারা আসল ভূমিহীন তারাই এই সুবিধার আওতায় এসেছেন।’

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৯ উপজেলায় ৪৩৩টি গৃহহীন-ভূমিহীনকে রঙিন টিনের ছাউনির সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে।  এরই মধ্যে ৩১৫টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। ’

টুটুল/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়