খুবির ৩ শিক্ষক ও ২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
খুলনা বিশ্ববিদ্যলয়ের তিন শিক্ষক ও দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন
খুলনা বিশ্ববিদ্যলয়ের তিন শিক্ষক ও দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে খুলনার সচেতন নাগরিক ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) নগরীর শিববাড়ি মোড়ে এ মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. বাহারুল আলম, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির এস এম শাহাদাত হোসেন ও এস এ রশিদ, খুলনা জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সঞ্জিত মণ্ডল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন পরিষদের সৌমিত্র সৌরভ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের আলামিন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ফরহাদ হাসান রাজ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের পলাশ, সচেতন নাগরিক নেতা মহসিন, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান হাবিব এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
খুবির রসায়ন ডিসিপ্লিনের ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিক রহমান বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কথা বলতে পারে না। তাদের বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কোনো আন্দোলন, প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর দমন নিপীড়ন চালানো হয়। অনেকদিন ধরেই এমন পরিস্থিতি চলে আসছে। তিনি অনতিবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে দুই শিক্ষার্থীকে ক্লাসে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া এবং শিক্ষকদের নিজ নিজ পদে বহাল রাখার দাবি জানান।’
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের প্রতিনিধি আল আমিন বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নেই, কিন্তু এখানে অপরাজনীতি রয়েছে। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক বহিষ্কারের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ জানান তিনি।
অধ্যাপক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘প্রতিটি গণতান্ত্রিক দাবিতে ছাত্ররা এগিয়ে এসেছে এবং আসবে। ছাত্ররা প্রতিটি বিষয়ে কথা বলবে, কিন্তু তাদের বক্তব্য যদি ভিসির বিরুদ্ধে যায় তার মানে এমন না তিনি বহিষ্কার করবেন। এই নীল নকশা আমরা বাস্তবায়িত হতে দেবো না। শুধু আমরা নয়, পুরো খুলনাবাসী সম্মিলিতভাবে এর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি ডা. বাহারুল আলম বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এ অঞ্চলের মানুষের অনেকদিনের আন্দোলনের ফসল। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অরাজকতা চলতে দেওয়া যায় না। ঘটনা ঘটেছে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে, তার শাস্তি কেন হবে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ছাত্রদের পাঁচ দফা দাবি বিশ্লেষণ করেছি। তারাতো অন্যায় কিছু দাবি করেনি। আর অন্যায় দাবি করলেও আপনারা তাদের নিয়ে বসেন, আলাপ আলোচনা করেন, তার জন্য তো এতো বড় শাস্তি দিতে পারেন না! আমরা এই সমাবেশের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আশা করছি তার হস্তক্ষেপে দ্রুতই এর সুরহা হবে।’
প্রসঙ্গত, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানানো, শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও গুরুতর অসদাচরণের দায়ে বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল, একই ডিসিপ্লিনের শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরীকে অপসারণ এবং বাংলা ডিসিপ্লিনের মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান (১৮ ব্যাচ) এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুল ইসলামকে (১৭ ব্যাচ) বহিষ্কার করেছে খুবি প্রশাসন। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এ দু’ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আমরণ অনশন করছে। হয় ‘বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, না হয় মৃত্যু’- এর যে কোন একটি বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে তারা।
খুলনা/নূরুজ্জামান/বুলাকী
আরো পড়ুন