ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক যাওয়া বন্ধ, প্রতিবাদে ধর্মঘট

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৮, ৩১ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৭:৪১, ৩১ জানুয়ারি ২০২১
ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক যাওয়া বন্ধ, প্রতিবাদে ধর্মঘট

পরিবেশ অধিদপ্তরের নিদের্শনা অনুযায়ী কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপের ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কোস্টগার্ডের সদস্যরা। আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা দোকান, হোটেল, পরিবহন বন্ধ করে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে। সেখানে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। 

রোববার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে দ্বীপের দোকান, হোটেল-কটেজ, সবধরনের পরিবহন বন্ধ রয়েছে। তবে খাবার হোটেল ও ফার্মেসি ধর্মঘটের আওতামুক্ত। 

সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় গত বছর ১২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেখানে পর্যটক আনাগোনা সীমিতকরণ এবং ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক যাওয়া নিষিদ্ধ করে পরিপত্র জারি করে। এর আলোকে পরিবেশ অধিদপ্তর ১৪টি বিধিনিষেধ আরোপ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় কোস্টগার্ডকে। 

কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশনের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট আরিফুজ্জামান রনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও কিছু সংখ্যক পর্যটক কোস্টগার্ড সদস্যদের অগোচরে ছেঁড়া দ্বীপে যাতায়াত করতেন। রোববার থেকে কড়াকড়ি আরোপ করে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। 

সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, পর্যটকদের সেন্টমার্টিন বেড়াতে আসার প্রধান আকর্ষণ হলো ছেঁড়া দ্বীপ ভ্রমণ। পরিবেশ অধিদপ্তরের বিধিনিষেধ আরোপ সম্পর্কে আগে থেকে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও দ্বীপের বাসিন্দাদের অবহিত করা হয়নি। 

তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের ১০ হাজার বাসিন্দার পাশাপাশি জীবিকার তাগিদে দেশের বিভিন্ন এলাকার আরও ৪ হাজার মানুষ এখানে বসবাস করছেন। তাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান খাত পর্যটন। পর্যটন মৌসুমের ৪ মাসের আয় দিয়ে তাদের সারা বছর চলতে হয়।  

স্থানীয় এ ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, পূর্ব-ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করে ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত নিষিদ্ধ করায় ক্ষতির মুখে পড়েছে দ্বীপবাসী ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে তারা সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে। 

বিকেলে দ্বীপে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ধর্মঘট পালনকারীরা। সেখানে সেন্টমার্টিনের হোটেল মালিক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি মৌসুমে পর্যটন ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন হঠাৎ করে ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত নিষিদ্ধ করায় তারা বিপাকে পড়েছেন। এতে তাদের জীবিকার একমাত্র মাধ্যম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। 

ধর্মঘটের কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া অন্তত সাড়ে ৩ হাজার পর্যটক দুর্ভোগে পড়েছে বলে জানান কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তোফায়েল আহমদ। তিনি বলেন, চলতি পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ৭টি, কক্সবাজার থেকে ১টি এবং চট্টগ্রাম থেকে ১টি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাতায়ত করছে। এ সব জাহাজে প্রতিদিন অন্তত সাড়ে ৩ হাজার পর্যটক আসা-যাওয়া করে থাকে।

ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে আগামীকাল (সোমবার) থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলে জানান এ পর্যটন ব্যবসায়ী।

 

রুবেল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়