ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র চুরি করে বিক্রির অভিযোগ

বান্দরবান প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৩, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১  
বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র চুরি করে বিক্রির অভিযোগ

বান্দরবানের লামা উপজেলায় সদর ইউনিয়নের হ্লাচ্ছাই পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র চুরি করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

লামা পৌরসভার লাইনঝিরিতে মো. রফিকের ভাঙ্গারি দোকানে গভীর রাতে সরকারি স্কুলের আসবাবপত্র বিক্রি হচ্ছে দেখে স্থানীয়রা লামা থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই দোকন থেকে মালামালগুলো আটক করে। পরে সেগুলো পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ইউছুপ আলীর জিম্মায় দেয়।

পুলিশ জানায়, গত ১১ জানুয়ারি হ্লাচ্ছাই পাড়া স্কুলের জরাজীর্ণ ও পুরাতন মালামাল প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে ৩০ হাজার ৫০০ টাকায় কিনে নেন বৈল্যারচর এলাকার হাজী মো. নুরুল হোসাইনের ছেলে মো. জহির আহমদ। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক স্মারক নং- উশিঅ/লামা/১৯ তারিখ- ১২ জানুয়ারি ২০২১ পত্র মূলে নিলাম গ্রহীতা মো. জহির আহমদকে মালামাল অপাসারণের জন্য কার্যাদেশও প্রদান করা হয়।

মো. জহির আহমদ বলেন, ‘অফিস আদেশের পরে পুরাতন গৃহটি ভেঙে নিয়ে যেতে শ্রমিক নিয়োজিত করি। নিলামে কিছু জরাজীর্ণ মালামালের কথা উল্লেখ ছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এসএমসি কমিটি আমাকে জরাজীর্ণ মালামাল হিসেবে কিছু কাঠের ও লোহার টেবিল-বেঞ্চ প্রদান করেন। সেখানে ২০-২৫টি লোহার বেঞ্চ ছিল। ৭-৮টি লোহার বেঞ্চ ভালো ছিল। সেগুলো আমি স্থানীয় কয়েকজনের কাছে বিক্রি করি। বাকী ৯-১০টি জরাজীর্ণ লোহার বেঞ্চ স্থানীয় জামাল কারবারীর ছেলে মো. সোহেলকে সোমবার সকাল ৯টায় কেজি দরে বিক্রি করি। অতিরিক্ত বেঞ্চগুলো সোহেল কোথায় পেল বা তাকে কে দিয়েছে সেটা আমি বলতে পারব না।’

ভাঙ্গারি দোকানদার মো. রফিক বলেন, ‘সোমবার বেলা ১১টায় ও মঙ্গলবার গভীর রাত ১১টায় দুই দফায় সোহেল আমার কাছে স্কুলের কিছু ব্যবহৃত ও ভালো লোহার আসবাবপত্র বিক্রি করেন। সোহেল আমাকে জানায় এগুলো সে হ্লাচ্ছাই পাড়া স্কুল থেকে এনেছে।’
এ বিষয়ে মো. সোহেল বলেন, ‘আমি লোহার হাই ও লো বেঞ্চগুলো হ্লাচ্ছাই পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এনেছি।’

হ্লাচ্ছাই পাড়া স্কুলের দপ্তরী কাম প্রহরী ফরহাদ নেওয়াজ বাপ্পী বলেন, ‘মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা ২৯ মিনিটে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মরিয়ম বেগম আমাকে ফোন করে বলেন, স্কুলের নতুন ভবনের ২য় তলার ছাদে থাকা লোহার বেঞ্চগুলো স্থানীয় জামাল কারবারীর ছেলে মো. সোহেলকে দিয়ে দিতে। রাত ৮টার দিকে সোহেল এলে আমি স্কুলের গেটের তালা খুলে দিই। পরে সোহেল মালামালগুলো নিয়ে যায়।’

হ্লাচ্ছাই পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘চুরির ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা অফিস তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘গত মঙ্গলবার গভীর রাতেই আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। বিষয়টি বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে দুজন সহকারী শিক্ষা অফিসারকে দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগামী ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করবেন। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘সরকারি স্কুলের মালামাল রাতের আঁধারে বিক্রি হচ্ছে এমন খবর পেয়ে আমরা মালামালগুলো আটক করে কাউন্সিলর মো. ইউছুপ আলীর জিম্মায় দিয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সিদ্ধান্ত প্রদান করবে।’

বাসু দাশ/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়