করোনা ঠেকাতে মমেক হাসপাতালে সবুজ-হলুদ টোকেন
মাহমুদুল হাসান মিলন, ময়মনসিংহ || রাইজিংবিডি.কম
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ও চিকিৎসেবা কার্যক্রম গতিশীল রাখতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে এক পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। সেখানে চালু করা হয়েছে সবুজ ও হলুদ টোকেন সিস্টেম। সম্প্রতি হাসপাতাল ঘুরে এ পদ্ধতির কথা জানা যায়।
মমেক হাসপাতালের বর্হিবিভাগে প্রতিদিন আড়াই হাজার রোগীকে সেবা দেওয়া হয়। এই পদ্ধতি অনুসরণের ফলে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা কমেছে বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা প্রত্যেক রোগীকে প্রথমে জরুরিসেবা কাউন্টারের সামনের বুথ থেকে টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। সেখানে কর্তব্যরত মো. অমিত হাসান জানান, প্রথমে রোগীর সমস্যার কথা শোনা হয়। এরপর করোনার উপসর্গ না থাকলে সবুজ রঙের অর্থাৎ নন কোভিড পেসেন্ট টোকেন দেন। সেই টোকেন দেখিয়ে বহির্বিভাগের কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়।
কোনো রোগীর করোনার উপসর্গ থাকলে তাকে দেওয়া হয় হলুদ রঙের অর্থাৎ ফ্লু-কর্নার টোকেন। সেই টোকেন নিয়ে রোগী ২নং বুথে ফ্লু-কর্নারে গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ফ্লু-কর্নার বুথে কর্তব্যরত ১৪নং ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. তন্ময় মন্ডল জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের প্রাথমিকভাবে এন্টিজেন টেস্ট করা হয়। রোগীর অবস্থা খারাপ থাকলে কোভিড-১৯ টেস্ট করে আইসোলেশনে রাখা হয়। পরে ফলাফল পাওয়ার পর কোথায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বহির্বিভাগে নাক, কান, গলা বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা তারাকান্দা উপজেলার কাশীগঞ্জ এলাকার মাজেদ মিয়া বলেন, এই পদ্ধতি ভালো। এতে করোনা রোগীরা আলাদা চিকিৎসা নিতে পারছেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলার প্রায় চার কোটি মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় মমেক হাসপাতাল থেকে। এছাড়াও সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাজীপুরের মানুষও প্রতিদিন এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন।
এক হাজার শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে আড়াই থেকে তিনি হাজার। এছাড়াও জরুরি বিভাগে ওয়ান স্টপ সার্ভিসে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক এবং বহির্বিভাগে আড়াই থেকে তিন হাজার রোগী সেবা নিয়ে থাকেন।
দেশে করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর পর কিছুটা ঝিমিয়ে পরে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। রোগীর সংখ্যা অনেক কমে যায়। করোনায় আক্রান্ত হয় হাসপাতালে কর্মরত সাড়ে তিনশত চিকিৎসক, নার্স, বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী। বর্তমানে করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে হাসপাতালের পরিবেশ।
বিভিন্ন সংকটের মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার কথা জানান হাসাপাতালের উপপরিচালক (প্রশাসন) জাকিউল ইসলাম। তিনি বলেন, এক হাজার শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার রোগী ভর্তি থাকে। ফলে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। তবে তারা সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ঢাকা/বকুল
আরো পড়ুন