ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

জোড়া খুন মামলায় ঘাতকের ফাঁসির আদেশ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৭, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৫:১৫, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১
জোড়া খুন মামলায় ঘাতকের ফাঁসির আদেশ

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে জীবন্ত নবজাতককে পানিতে ছুঁড়ে হত্যার পর মাকেও চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় ঘাতক নজরুল ইসলামকে (২৯) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া তাকে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে এবং অর্থদণ্ডের টাকা আদায় করে নিহতের পরিবারকে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় আসামির উপস্থিতিতে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত নজরুল ইসলাম পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের পাবদা গ্রামের সোহরাব উদ্দিনের ছেলে।

অন্যদিকে নিহতরা হচ্ছেন— রহিমা খাতুন (২৭) ও তার ৫৫ দিনের শিশু ছেলে আমিরুল। রহিমা খাতুন একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও একই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর মেয়ে।

রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ‌্যাডভোকেট যজ্ঞেশ্বর রায় চৌধুরী জানান, তদন্ত শেষে মামলার চার আসামির মধ্যে তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে একমাত্র নজরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে ২০১৮ সালের ২৪শে জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

মামলা বিবরণে জানা যায়, রহিমা খাতুনের প্রতিবন্ধীতার সুযোগে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল নজরুল। সালিশ দরবারে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিতও হয়।

সালিশ দরবারে টাকা-পয়সা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ১৯ই নভেম্বর কিশোরগঞ্জের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন রহিমা। সন্তান জন্মদানের পর নজরুলের ওপর রহিমাকে বিয়ের চাপ বাড়িয়ে দেন।

পরে ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি রহিমা খাতুন ও তার ছেলে আমিরুলকে আত্মীয়ের বাড়িতে নেওয়ার কথা বলে রাত ৮টার দিকে আঙ্গিয়াদি মীরের টেক আতার বাড়ি কালভার্টের ওপর থেকে জীবন্ত অবস্থায় শিশুটিকে বিলের পানিতে ছুঁড়ে মারে নজরুল। এরপর বিলের পানিতে রহিমাকে চুবিয়ে হত‌্যা করে নজরুল।

হত্যাকাণ্ডের ৮ দিন পর ২১শ জানুয়ারি মিরারটেক বিলভরা গুদি বিল থেকে গলিত অবস্থায় রহিমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ২২শে জানুয়ারি এই ঘটনায় নিহত রহিমার বড় ভাই আবদুল আউয়াল বাদী হয়ে হত্যা ও গুমের অভিযোগ এনে নজরুল ইসলাম, নজরুলের ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম (১৮), বাবা সোহরাব উদ্দিন ও মা মদিনা খাতুন এই চারজনকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় মামলা করেন।

রহিমা খাতুনের লাশ উদ্ধারের ১০ দিন পর ৩১শে জানুয়ারি সন্ধ্যায় একই স্থান থেকে শিশু আমিরুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ১৬ই ফেব্রুয়ারি ভোরে ফেনী জেলার দাগনভূঞার শ্রীরামপুর এলাকার এক বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পরদিন ১৭ই ফেব্রুয়ারি আদালতে জোড়া খুনের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় নজরুল।

রুমন/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়